২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী মিম ও রাজীব বাসচাপায় হত্যার শিকার হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশ তোলপাড় করা এক অভূতপূর্ব আন্দোলন গড়ে তুলেছিল শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের মুখোমুখি হয় কালের কণ্ঠ।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হয়নি।’ রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করেন কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে চলাচলকারী বাসগুলো নির্দিষ্ট কয়েকটি কম্পানির আওতায় এনে পরিচালনা করা হলে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, যত্রতত্র বাস থামানো বন্ধ হবে। এর ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসার পাশাপাশি যানজটও কমে আসবে। মানুষের কর্মঘণ্টাও বেঁচে যাবে।’
পরিবহন সড়ক আইন বাস্তবায়িত না হওয়া এবং সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হলো আপনি নৈরাজ্য বন্ধ করতে চান কি না সেটা। সেই চাওয়াটা আন্তরিকতার সঙ্গে চান কি না। যদি চান তাহলে কোনো বাধা বাধা হতে পারে না। সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক ইচ্ছা থাকতে হবে। নৈরাজ্য বন্ধের দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে। পরিবহন সেক্টরের নেতা ও সংগঠনগুলোকে একটা শৃঙ্খলায় আনতে হবে। সরকারের এই উদ্যোগের সঙ্গে সারা দেশের রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সংগঠনকে সম্পৃক্ত করতে হবে; যাতে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত বলে মনে করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিগতভাবে অনিয়ম করতে করতে এটা মজ্জাগত ব্যাপার হয়ে গেছে। আইন না মানার শাস্তি নিশ্চিত করলে ৯০ ভাগ মানুষ সেটা মানবে।’
ট্রাফিক নিয়ম পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেও তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। এ সম্পর্কে কাঞ্চন বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে বিষয়টি কিভাবে আসতে পারে তার জন্য আমরা বুয়েট, বিআরটিএ, ব্র্যাকসহ সংশ্লিষ্টরা বসে একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছি ২০১২ সালে। আমরা শুনেছি, কয়েকটি বইয়ের অনলাইন সংস্করণে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দাবি, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে যেন বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’ সূ্ত্র : কালের কণ্ঠ।