আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে পাসপোর্ট অধিদফতর। এতে সাধারণ মানুষের নতুন ই-পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দীর্ঘদিন থেকেই খুবই সীমিত নতুন পাসপোর্ট পাচ্ছেন আবেদনকারীরা। নতুন পাসপোর্টের জন্য দুই লাখেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে আছে ঢাকাসহ পাসপোর্ট অধিদফতরের বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিসে। পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর গত ২৩ মার্চ থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ ও বিতরণের সব ধরনের কাজ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে অফিস কার্যক্রম চালুর পর শুধু রি-ইস্যু পাসপোর্ট বিতরণ শুরু করা হয় যা এখন চলছে।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাসের কারনে পাসপোর্টের কার্যক্রম সীমিত আকারে করা হচ্ছে। আগামী ১সেপ্টেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাসপোর্টের অন্যান্য কার্যক্রম আগের মতোই থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে আগত ব্যক্তির খুব কাছাকাছি থেকে ছবি তোলাসহ নানা কাজ করতে হয় সংশ্লিষ্টদের। এতে করে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবানা থেকে যায়। সার্বিক দিক চিন্তা করেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী মন্তব্য করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার কারণে পাসপোর্ট সেবা বন্ধ হওয়ার আগে গত ২২ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম। তখন ঢাকাসহ ৯টি পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট সেবা দেয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে আরও ২৫টি পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট দেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। যা আবার চালু করা হবে। এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন ও রি-ইস্যু পাসপোর্টের নিবন্ধন কার্যক্রম সীমিত পরিসরে ( মোট সক্ষমতার ৪০ ভাগ সেবা) চালু করা হবে বলে জানান পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তারা। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে এই সেবার মান বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। আবেদনকারীদের মধ্যে ইতোমধ্যে যাদের ছবি ও হাতের ছাপ নেয়ার জন্য অ্যাপয়েনমেন্ট দেয়া হয়েছে তারা ১সেপ্টেম্বর থেকে ১০সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অনলাইনে অ্যাপয়েনমেন্ট করতে পারবেন। এছাড়া ১সেপ্টেম্বর থেকে নতুন ও পুরাতন আবেদনকারীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আবেদনকারীদের জন্য ১১ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে বুকিং দেয়া শুরু করা হবে।
সূত্র জানায়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে অবশিষ্ট ২৫টি রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসে (আরপিও) ধাপে ধাপে (প্রতি সপ্তাহে পাঁচটি করে) ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে। ১৪সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম দফায় গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, নোয়াখালী ও ফেনীতে ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। দ্বিতীয় দফায় মুন্সীগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে চালু করা হবে। তৃতীয় দফায় যশোর, খুলনা, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু করা হবে। চতুর্থ দফায় চট্টগ্রামের চাদগাঁও, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও রংপুরে এবং পঞ্চম দফায় দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বরিশাল ও পটুয়াখালী আঞ্চলিক কার্যালয়ে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু করা হবে।
পাসপোর্ট অধিদফতরের একজন কর্মকর্তারা জানান, নতুন পাসপোর্টের আবেদন জমা নেয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মীদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। কারণ, আবেদনকারীকে পাশে নিয়ে আঙুলের ছাপ নিতে হয় এবং ছবি তুলতে হয়। এটা করতে গিয়ে দায়িত্বরত যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। সেজন্যই এতদিন এটা বন্ধ ছিল। তবে এখন সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এটা করা হবে।
Leave a Reply