জীববৈচিত্র্য ঠিক রাখতে সড়কের প্রকল্পে বেশি বেশি কালভার্ট রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যেসব কালভার্ট বিদ্যমান রয়েছে সেগুলোর বাইরেও আরো কালভার্ট রাখতে হবে, যাতে বেশি পরিমাণে পানি চলাচল করতে পারে। এ ছাড়া বেশি করে গাছ লাগানোর কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশীয় মাছ সংরক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশ দেন। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব তথ্য জানান। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সিলেট-তামাবিল সড়কের বিদ্যমান দুই লেনকে চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে সরকারের মোট খরচ হবে তিন হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। গতকাল একনেক সভায় এসংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নয়নসহ ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে একনেকে। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দুই হাজার ৭১ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে চার হাজার ৫৯৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পর্যায়ক্রমে সব আন্ত জেলা মহাসড়ক এবং সব মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এর অংশ হিসেবেই সিলেট-তামাবিল মহাসড়কটি চার লেন করা হচ্ছে। তা ছাড়া খাদ্য সংরক্ষণাগার তৈরির মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলে মটকা কিনে দেওয়া হবে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খাদ্যশস্য নষ্ট হবে না। এ ছাড়া বড় বড় আটটি সাইলো তৈরি করা হবে। নানা কারণে প্রকল্পটির মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পেতে অনেক ক্ষেত্রেই দেরি হয়ে যায়। যদিও এ বিষয়টি খুব বেশি আলোচনায় আসে না। তা ছাড়া রেট শিডিউল পরিবর্তনসহ আরো নানা কারণ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, হাওর এলাকার জন্য শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক নামে একটি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি দেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হবে। কেননা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জিডিপিতে হাওর অঞ্চলের অবদান অনেক বেড়ে যাবে। এই প্রকল্পে পর্যটকদের জন্য আবাসিক হোটেল ও পিকনিক স্পট তৈরির প্রস্তাব যোগ হতে পারে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে মতলব-মেঘনা-ধনাগোদা-বেড়িবাঁধ সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ, ব্যয় হবে তিন হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। সারা দেশে পুকুর-খাল উন্নয়ন, ব্যয় ৪২২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ, ব্যয় এক হাজার ৬৪৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকার নিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যয় ৭৪১ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
Leave a Reply