1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ১০ দেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হলেন স্টার লাইনের হাজী আলাউদ্দিন তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নামুক আবার পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রী পরিবহন তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

বন্যায় তছনছ সড়ক যোগাযোগ : বিটুমিনের রাস্তা যেন দুর্গম পাহাড়ি পথ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

দেড় মাসের বন্যায় ভেঙে পড়েছে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথাও ব্রিজ-কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দুই প্রান্তের সংযোগ। কোথাও ভেঙে গেছে কালভার্ট। পানিতে নিমজ্জিত অধিকাংশ সড়কের বিটুমিন উঠে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় খানা-খন্দ। বন্যার পানিতে যেন ‘পাউডারের মতো ধুয়ে গেছে’ মাইলের পর মাইল সড়কের বিটুমিন। এতে চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক থাকলেও মালামাল নিয়ে পায়ে হেঁটে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে হচ্ছে মানুষকে। মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বন্যার পানি নামার পর কৃষি থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন খাত ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও এখনো ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগ কোথাও দেখা যায়নি। এতে সহসাই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির সম্ভাবনা দেখছেন না বন্যাকবলিত এলাকার মানুষগুলো। অনেক স্থানে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়া ভাঙাচোরা সড়ক এবারের বন্যায় একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোথাও ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ২০২০ সালে এসেও মেরামত হয়নি। চলতি বছরের বন্যায় সেসব সড়ক যেন পরিণত হয়েছে দুর্গম পাহাড়ি পথে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক-ব্রিজ-কালভার্টের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে। হিসাব শেষে সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। আবার কখনও বলা হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়ক সংস্কার শুরু হবে।
আমাদের জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরে টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বন্যায় চরম দুর্ভোগের পর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসতে শুরু করেছে বন্যার্তরা। তবে বন্যার তীব্র ¯্রােতে ভেঙে যাওয়া ক্ষত-বিক্ষত সড়কে চলাচল করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার বিটুমিন উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় খানা-খন্দ। ভাঙা সড়কে মানুষের সহায়তায় কিছু যানবাহন হেলে-দুলে চললেও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রী নিয়ে উল্টে যাচ্ছে ছোট-খাটো যানবাহন। পরিবারের কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই থাকে মৃত্যুর শঙ্কা।
বন্যা দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় জামালপুরের সাত উপজেলায় বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমির পাশাপাশি রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইসলামপুর উপজেলার স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়কগুলো। সে সময় বন্যার পানি নেমে গেলেও পরবর্তী সময়ে ভাঙা রাস্তাঘাট মেরামত না করায় প্রতি বছরের বন্যায় সড়কগুলো আরও ভেঙে এখন বড় বড় খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় গর্তের কারণে সরাসরি কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। তাই স্থানীয়দের মালপত্র নিয়ে পায়ে হেটেই চলাচল করতে হচ্ছে। বছরের পর বছর ভাঙা সড়ক দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহালেও কর্তৃপক্ষের কোন প্রদক্ষেপই নেই বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ইসলামপুর উপজেলার বলিয়াদহ গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব অটোরিক্সা চালক নজরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে আমার অটোরিক্সাই কয়েকবার উল্টে গেছে। নামমাত্র ত্রাণ সহায়তার চাইতে সেই টাকা ভাঙা সড়ক মেরামত করলে আরও উপকার হতো। তখন আমরা নিজেরাই আয়-রোজগার করে চলতে পারতাম।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি বন্যায় জামালপুর জেলায় ১৯৪ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক এবং ৬৬ কিলোমিটার পাঁকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চারটি বাঁধ এবং পাঁচটি ব্রিজ-কালভার্ট। জামালপুর এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে। ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সড়কগুলো দ্রুতই মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়াও সড়ক সংস্কারের জন্য ক্ষতি নির্ধারণ করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, এ জেলার চারটি উপজেলায় চলতি বছরের বন্যায় ১২৫ কিলোমিটার গ্রামীন রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা সংস্কারের জন্য কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা লাগবে বলে জানিয়েছেন মাদারীপুর এলজিইডি। মাদারীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, প্রাথমিক জরিপ করে দেখা গেছে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলো সংস্কার করতে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা লাগবে। করোনাকালীন সময় কেটে গেলে সংস্কার কাজ শুরু হবে।
এদিকে প্রতিবছর বন্যার ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত দুধকুমার নদী খনন ও বাঁধ সংস্কারের দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার জনগণ। সেই সঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন ও সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তারা। আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের নতুন স্লুইচগেট সংলগ্ন দুধকুমার নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক ফাউন্ডেশন ও স্থানীয় অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ এলাকাবাসীরা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, দুধকুমার নদী কিছুদিন আগে খনন করা হলেও নামমাত্র খনন করায় তা কোন কাজে আসেনি। নদীটির গভীরতা বাড়লে এ এলাকার মানুষ বন্যা থেকে রেহাই পেত।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT