রাজধানীর মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ের একটি সুসজ্জিত কক্ষ দখল করে রেখেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহযোগী সংগঠন পরিচয়ে গজিয়ে ওঠা প্যাডসর্বস্ব সংগঠন ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’। বিলাসবহুল এই কক্ষ অনৈতিকভাবে দখলে রেখে নানা দুর্নীতি-অনিয়ম করছেন সংস্থার বন্দর ও পরিবহন বিভাগের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নাজমুল হুদা। অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব এবং বিআইডব্লিউটিএর সিবিএর এক নম্বর যুগ্ম সম্পাদক পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএর বর্তমান চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিতে সংস্থাটির সচিব আবু জাফর হাওলাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পরও চলে গেছে প্রায় এক মাস। কিন্তু নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। সচিব অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি ‘খতিয়ে দেখে’ উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ের চার তলায় ৩৫০ বর্গফুটের একটি কক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিআইডব্লিউটিএর প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কার্যালয়ের নামে অনেক আগে বরাদ্দ হয়েছিল। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’ প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিটের একটি নামসর্বস্ব আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরে নামসর্বস্ব এই সংগঠনের আহ্বায়ক দেওয়ান সেতাবুর রহমান ও সদস্য সচিব নাজমুল হুদার লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ২০ এপ্রিল বিআইডব্লিউটিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হোসেন সংসদের নামে বরাদ্দ করা কক্ষটিই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডকে কার্যালয় হিসেবে সাময়িকভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেন।
এরপর থেকে এখনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও সুসজ্জিত কক্ষটি অনৈতিকভাবে দখলে রেখেছেন নাজমুল হুদা। সংগঠনের আহ্বায়ক ও সংস্থার ড্রেজিং বিভাগের সহকারী দেওয়ান সেতাবুর রহমানের নিষ্ফ্ক্রিয়তার সুযোগে বর্তমানে কক্ষটি বন্দর ও পরিবহন বিভাগের সহকারী নাজমুল হুদার একক দখলে রয়েছে। অথচ দেশের অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’ নামে কোনো সংগঠনের অফিস কক্ষ নেই। ইতোমধ্যে সরকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের কমিটি বিলুপ্ত করে সংগঠনটি পরিচালনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করেছে। তাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহযোগী সংগঠন পরিচয় দিয়ে কক্ষটিকে দখলে রাখার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Leave a Reply