1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
র‌য়্যাল এনফিল্ডের ৩৫০ সিসির নতুন ৪ বাইকের যত ফিচার ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ১০ দেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হলেন স্টার লাইনের হাজী আলাউদ্দিন তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নামুক আবার পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা

বিমা কেন সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

আবুল কাসেম ভূইয়া
  • আপডেট : শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আমাদের দেশে দুই ধরনের বিমার প্রচলন রয়েছে। একটি হলো জীবনবিমা অপরটি হলো সাধারণ বিমা। আমাদের দেশে বিমার প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে। জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার মধ্যে সাধারণ বিমার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সাধারণ বিমার সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্পকারখানার কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে জড়িত। জীবনবিমা অনেকটা নির্ভর করে মানুষের ইচ্ছার ওপর। আর সাধারণ বিমা বাধ্যতামূলক। কারণ কোনো আমদানিকারক বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে গেলে তাকে অবশ্যই আমদানিকৃত পণ্যের জন্য বিমা করতে হবে। যাকে বিমার ভাষায় বলা হয় মেরিন ইন্স্যুরেন্স বা নৌবিমা। কোনো আমদানিকারক যদি বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে গিয়ে কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হন, তাহলে বিমা কোম্পানি তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। কারণ বিমা কোম্পানি বিমার মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যের সম্পূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে থাকে। এভাবেই আমাদের দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্যের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। কোনো কারখানার মালিক তার কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন, তবে ঐ ঋণের বিপরীতে বিমাঝুঁকি গ্রহণ করতে হবে। কারখানার জন্য অগ্নিবিমা, বন্যা ও সাইক্লোন বিমা, ভূমিকম্প বিমা, চুরি, ডাকাতি, মারামারির জন্য বিমা করতে হয়। কারখানা চলাকালীন উল্লিখিত কারণগুলোর মাধ্যমে কোনো ক্ষতি সংঘটিত হয়, তাহলে বিমা কোম্পানি সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার নেবে। সাধারণ বিমার মধ্যে মোটর বিমা উল্লেখযোগ্য। রাস্তায় চলাচলকারী প্রতিটি যানবাহনের বিমা করা বাধ্যতামূলক। মোটর বিমার মধ্যে রয়েছে প্রথম শ্রেণির বিমা। যে বিমার আওতায় যানবাহনের সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি বিমা কোম্পানি বহন করবে।

Symbol of family protection by a general agent

যানবাহনের অপর বিমা হচ্ছে থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স। যানবাহনের আইন অনুযায়ী প্রতিটি যানবাহনকে এই বিমা করতে হয়। হাল ইন্স্যুরেন্স নামে আরেকটি বিমা রয়েছে যার আওতায় সমস্ত নৌবাহন রয়েছে।
উল্লিখিত বিমাগুলো ছাড়া আরো অনেক ধরনের বিমা রয়েছে সাধারণ বিমার আওতায়। যেগুলোর বহুবিধ ব্যবহার নেই। তবে নৌবিমা ও অগ্নিবিমার বেশি প্রচলন রয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণ বিমার বহুবিধ প্রয়োজনীয়তার কারণে এটি একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশে সরকারি বিমা কোম্পানি সাধারণ বিমা কোম্পানি ছাড়াও আরো ৪৫টি বেসরকারি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানিতে হাজার হাজার মানুষ চাকরি করছেন।
আদিকাল থেকেই বিমা ব্যবসার প্রচলন থাকলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একমাত্র সাধারণ বিমা কোম্পানি ব্যবসায় করে আসছিল। ১৯৮৫ সালের দিকে তত্কালীন সরকার বেসরকারি উদ্যোগে সাধারণ বিমা কোম্পানি খোলার অনুমতি প্রদান করে। বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলো উন্নত গ্রাহকসেবা প্রদান করার কারণে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ে। তারপর ধীরে ধীরে বেসরকারি সাধারণ বিমাগুলোর আত্মপ্রকাশ ঘটে। বর্তমানে যে সংখ্যক বেসরকারি সাধারণ বিমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্যের তুলনায় বিমা কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে। যার ফলে দেশের সীমিত ব্যবসায় নিয়ে বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে চলে নোংরা প্রতিযোগিতা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিমা ব্যবসায়ে একেবারে ধস নেমে এসেছে। এর মূল কারণ হলো বিমা গ্রাহকদের বিমাঝুঁকি গ্রহণে তীব্র অনীহা। এর কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে কোনো আমদানিকারক পণ্য আমদানি করতে গিয়ে বিমাঝুঁকি নিতে অনেক টালবাহানা করে থাকে। তারা অনেকেই চায় বিমাঝুঁকি না নিয়ে পণ্য আমদানি করতে।
অন্যদিকে শিল্পকারখানার মালিকেরাও বিমাঝুঁকি নিতে অনিচ্ছুক। যদিও বিমাঝুঁকি নিয়ে থাকলে ন্যূনতম বিমাঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে। যানবাহনের বিমার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বর্তমান এই পরিস্থিতিতে বিমা গ্রাহকদের এ ধরনের আচরণ খুবই দুঃখজনক। কারণ বিমা গ্রাহক যখন কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হন, তখন বিমা কোম্পানিগুলোর কাছে শরণাপন্ন হন। বিমা আইনে দুর্ঘটনা ঘটার আগেই বিমাঝুঁকি নিতে হয়। দুর্ঘটনার পর বিমাঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। বিমা গ্রাহকগুলো বিমা দাবির ব্যাপারে যে ধরনের আচরণ করেন তা আইনের আওতায় পড়ে না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী বিমা গ্রাহককে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আগেই বিমাঝুঁকি নিতে হবে। কারখানা প্রতিষ্ঠা করার সঙ্গে সঙ্গে বিমাঝুঁকি নিতে হবে। বিমা কোম্পানিগুলো বিমাঝুঁকি গ্রহণ করে তা পুনরায় সাধারণ বিমার কাছে বিমা করে থাকে। এতে করে বিমা গ্রাহক থাকেন সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। বিমাঝুঁকি নেওয়ার মেয়াদকালে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিমা কোম্পানিগুলো সার্ভেয়ার নিয়োগের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিমা দাবি নিষ্পত্তি করে দেয়। এতে বিমা গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না।
আমাদের দেশে বিমাশিল্প প্রতিষ্ঠিত হলেও বিমা গ্রাহকদের কাছে বিমার গুরুত্ব একেবারেই নেই। অথচ উন্নত বিশ্বে বিমার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। উন্নত বিশ্বে বিমাঝুঁকি গ্রহণ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আমাদের দেশে বিমাঝুঁকি গ্রহণের ব্যাপারে অনীহা দীর্ঘদিনের। এই অনীহা যত দিন দূর না হবে তত দিন পর্যন্ত এদেশের বিমা ব্যবসায় পরিপূর্ণতা পাবে না। দেশের বিমাশিল্পের স্বার্থে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে বিমাঝুঁকি গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাধ্যতামূলক বিমা করতে সরকারকে কঠোর আইন করতে হবে। তবেই এদেশে বিমা ব্যবসায়ের লক্ষ্য পূরণ হবে।
লেখক : বিমা কর্মকর্তা

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT