বেনাপোল স্থলবন্দরের বেশির ভাগ ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো হওয়ায় বন্দরের মালামাল খালাস প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে। আমদানিকারকরা বন্দর থেকে সময়মতো পণ্য খালাস করতে না পারায় সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জট। বন্দরের গুদাম থেকে পণ্য বের করার পর নতুন পণ্য ঢোকাতে হচ্ছে। স্থান সংকটের কারণে পণ্যবোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দরের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন। ট্রাক থেকে পণ্য নামানোর অনুমতি মিললেও ক্রেন ও ফর্কলিফট বিকল থাকায় বিপাকে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাঁদের মেশিনারিসহ ভারী মালামাল লোড-আনলোডের সময় দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে। বন্দরে পণ্যজট থাকায় পণ্য নিয়ে আসতে চাচ্ছেন না ভারতীয় ট্রাকচালকরা। বিরাজমান জটিলতার সামাধান না হলে যেকোনো সময় বন্ধ হতে পারে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
তবে বেনাপোল স্থলবন্দরে ফর্কলিফট ও ক্রেন সরবারহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম লিমিটেড বলছে ভিন্ন কথা। তারা পাঁচ বছরের চুক্তিতে ১৫ বছর ধরে কাজ করে চলেছে বন্দরে, বাড়েনি চুক্তি মূল্য, পরিশোধ করেনি কম্পানির পাওনা টাকা।
ফর্কলিফট ও ক্রেন সরবারহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিস লজিস্টিক্যাল সিস্টেমের বেনাপোলের ম্যানেজার ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘২০০৬ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্দরের পণ্য ওঠানো ও নামানোর জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ আর চুক্তি নবায়ন করেনি। আমাদের কম্পানির দেনা-পাওনাও পরিশোধ করেনি। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়ে ১৫ বছর ধরে পুরনো চুক্তিতে বন্দরের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ১৫ বছর আগের চুক্তিতে বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম চালানো সম্ভব না। আমাদের দেনা-পাওনা পরিশোধ করা হলে আমরা বন্দরের কার্যক্রম গুটিয়ে নেব।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘৫১ হাজার টন ধারণক্ষমতার বন্দরে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টন পণ্য ওঠানো-নামানো হয়। এসব পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য ন্যূনতম সাতটি ক্রেন ও ৩০টি ফর্কলিফট প্রয়োজন। সেখানে একটি ক্রেন ও দুটি ফর্কলিফট দিয়ে কাজ করানোর ফলে সেগুলো প্রায় সময় বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। বন্দরের জায়গা ও ক্রেন সমস্যার সমাধান না হলে বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প পথ নেই।’
Leave a Reply