বিমানবন্দর সড়কের এমইএস মোড়ে দেশের সবচেয়ে বড় অত্যাধুনিক আন্ডারপাস ‘সুরসপ্তক’-এর নির্মাণকাজ শেষের দিকে। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। প্রতিনিয়ত এই সড়কে দ্রুতগতির গাড়ি থামিয়ে পারাপার হতে হয় পথচারীদের, যার কারণে প্রায়ই ঘটে নানা দুর্ঘটনা। আন্ডারপাসটি খুলে দেওয়া হলে কমবে পথচারীদের ভোগান্তি। নির্বিঘ্নে রাস্তা পার হতে পারবে সব বয়সি মানুষ।
২০১৮ সালের ১২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আন্ডারপাসটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। এর আগে এই সড়কেই ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই বাসচাপায় মারা যায় শহিদ রমিজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই জন শিক্ষার্থী। সারা দেশে তখন শুরু হয় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। দোষীরা শাস্তিও পায়। এই দুর্ঘটনা ও জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি দিকনির্দেশনায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
আন্ডারপাসটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪২ মিটার। উচ্চতা ১৫ মিটার। আন্ডারপাসটি ঘুরে দেখা যায়, এক্সেলেটর ও লিফট সংযোজন করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক কাজ চলছে পুরোদমে। আন্ডারপাসের ভেতরে অন্য এক জগত্। ত্রিভুজ আকৃতির আন্ডারপাস ‘সুরসপ্তক’-এর দেওয়ালে রয়েছে বিভিন্ন ছবি। দেওয়ালে লাগানো হয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড। আন্ডারপাসের ভেতরে নানা ধরনের চিত্রকর্মের কাজও শেষ হয়েছে। আন্ডারপাসে রয়েছে চারটি সুড়ঙ্গ। এটিকে এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যাতে ২৪ ঘণ্টাই আলোর ব্যবস্থা থাকে। সুড়ঙ্গপথে প্রবেশ করতে পারবে সূর্য ও চাঁদের আলো। ভেতরে রাখা হয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।
এছাড়া উভয় পাশে চারটি প্রবেশ ও বহির্গমন পথ রয়েছে। সব বয়সি মানুষই সহজে এটিকে ব্যবহার করতে পারবে। সড়কের পূর্ব পাশে পথচারীদের বিশ্রামের জন্য জায়গা রাখা হয়েছে। অসুস্থ রোগীদের জন্য সড়কের এক পাশ থেকে অন্য পাশে হুইলচেয়ার ব্যবহার করে যাওয়ার জন্য রয়েছে পৃথক ঢালু পথ। প্রকল্পটির দেখাশোনা করার দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, মার্চের দিকেই প্রকল্পটি উদ্বোধন করার পরিকল্পনা ছিল। তবে করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে। এখন পুরোদমে কাজ চলছে। খুব শিগগির এটি উদ্বোধন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
Leave a Reply