এ ছাড়া নতুন যে ছয়টি জাহাজ সংগ্রহ করা হবে সেগুলোর মধ্যে দুটি মাদার ট্যাঙ্কার, যেগুলোর প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা এক লাখ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন, দুটি ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাঙ্কার ও দুটি ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার বাল্ক্ক ক্যারিয়ার।
বিএসসির প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জগুলো পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক জাহাজ শিল্পে বাংলাদেশের জন্য কেবল চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশের ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি অত্যন্ত সীমিত। এই সীমিত পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি চীনের ঋণ প্রাপ্তির বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে সীমিত দরপত্রের নীতিমালা জারি করায় সার্বিক বিষয়টি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। এ নীতিমালার কারণে ঋণ প্রাপ্তিসহ সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পাদন কঠিন। তাই জাহাজ কেনার জন্য এডিপির তহবিল থেকে কোনো ঋণ মেলে না। জিওবির অর্থায়নে ভরসা হলেও ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০টি বাল্ক্ক ক্যারিয়ার (প্রতিটি ১০০০০-১৫০০০ ডিডব্লিউটি) কেনার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হলেও এখনও কোনো তহবিল মেলেনি।
এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান এফওবি পদ্ধতিতে পণ্য আমদানি করলেও সমুদ্রপথে পরিবহনের জন্য নিজস্ব উদ্যোগে জাহাজ ভাড়া করে থাকে। এই ভাড়া বিএসসি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটি সমুদ্রপথে সরকারি পণ্য পরিবহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এভাবে বিদেশি জাহাজ মালিকরা এখান থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে।
বিএসসির বহরে যেসব জাহাজ চলাচল করে সেগুলোতে প্রায়ই অতি জরুরি যন্ত্রাংশ সংযোজন করতে হয়। কিন্তু পিপিআর অনুসরণ করে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা সংস্থাটির জন্য কষ্টসাধ্য। কারণ জাহাজ খুব সীমিত সময়ের জন্য বন্দরে অবস্থান করে। এ ছাড়া সিআইএফ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে বিপিসির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিএসসিতে ১৯৯১ সাল থেকে নতুন করে কোনো জাহাজ কেনা হয়নি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর বিএসসিতে নতুন জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় আসার পর পূর্ববর্তী সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত আর বাস্তবায়ন হয়নি। দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এই সংস্থাটির উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আরও ২৬টি জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ছয়টি জাহাজ সংগ্রহের সরকারি অনুমোদন মিলেছে। বাকি ২০টি সংগ্রহের জন্যও পরিকল্পনা করছে বিএসসি।
Leave a Reply