1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রী পরিবহন তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বিশ্বখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড রয়েল এনফিল্ড খুব শিগগিরই বাজারে আসছে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী এমটি কনসার্টো জাহাজে বাংলাদেশী নাবিকের মৃত্যুর তদন্ত দাবি লুব্রিকেন্ট আমদানিতে বাড়তি শুল্কায়নে ডলার পাচার বাড়বে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সম্পাদক ওসমান আলীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, অপসারণ দাবি

মাস্টারের অভাবে ১০৭ রেল স্টেশন বন্ধ, নতুন রেলপথ নির্মাণ হয়েছে ৪শ’ কিলোমিটার

 শিপন হাবীব 
  • আপডেট : বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

লোকবল সংকটে ধুঁকছে রেল। সংকট মোকাবেলায় অনেক ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এতেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। লোকবলের অভাবে অনেক স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে নির্মাণ হয়েছে নতুন আরও স্টেশন। এতে সংকট আরও বেড়েছে। সবমিলে লোকবল সংকটের কারণে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যাত্রীরা।

সূত্র জানায়, রেলওয়েতে বর্তমানে ১৫ হাজারের বেশি শূন্যপদ রয়েছে। লোকবল নিয়োগের প্রয়োজন থাকলেও অবসরে যাওয়া স্টেশন মাস্টার, চালক ও গার্ডদের চুক্তিভিত্তিতে নেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কৌশলে নিয়োগের পথ রুদ্ধ করে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এর মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়া হয়। বর্তমানে ৬০ জন স্টেশন মাস্টার চুক্তিতে কাজ করছেন। নতুন করে আরও অর্ধশতাধিক স্টেশন মাস্টারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আর ১১ বছরে প্রায় ৪শ’ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ হয়েছে। স্টেশন নির্মাণ হয়েছে ৯৫টি। নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে ১৩৩টি। এভাবে রেলওয়ের পরিধি বাড়লেও বাড়ছে না লোকবল। লোকবলের অভাবে নতুন নির্মিত স্টেশনগুলোসহ ১০৭টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ১৯৮৫ সালের নিয়োগবিধি অনুসারে রেলে কোনো নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ নেই। নতুন করে নিয়োগের জন্য বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধন করতে হবে। তাই আটকে আছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। এরই মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নতুন করে ৪৭ হাজার ৩ জন লোকবলের চাহিদা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেন পরিচালনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে ট্রেনচালক, গার্ড ও স্টেশন মাস্টার। এ তিন পদেই লোকবলের অভাব রয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। ট্রেন পরিচালনা স্বাভাবিক রাখতে এ তিন পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ায় খোদ রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। কারণ ভুল বা অপরাধ করলেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের শাস্তির আওতায় আনা যায় না। চুক্তিতে সে সুযোগ রাখা হয়নি।

এদিকে পশ্চিম রেলে ৬৬টি স্টেশন শুধু স্টেশন মাস্টারের অভাবে বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ঢালারচর-পাবনায় নতুন নির্মিত রেলপথে নতুন ৬টি স্টেশন রয়েছে। একই অবস্থা ফরিদপুর-ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথের ৫টি স্টেশনে। মাত্র ১টি স্টেশনে স্টেশন মাস্টার আছেন। বাকি ৪টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলে বর্তমানে ৩৩ জন স্টেশন মাস্টার চুক্তিভিত্তিতে চাকরি করছেন।

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গত ১১ বছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নতুন রেলপথ নির্মাণ, নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণসহ বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু লোকবলের অভাবে বাস্তবায়িত প্রকল্পের শতভাগ সেবা আমরা দিতে পারছি না। স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টম্যান পদে যথাযথ লোকবল থাকলে বন্ধ স্টেশনগুলো খুব সহজেই চালু করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চল রেলে ৬৬টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ৩৩ জন স্টেশন মাস্টার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করছেন। নতুন নির্মিত কিছু স্টেশনে অন্য স্টেশন থেকে মাস্টার এনে চালিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে করে যেসব স্থান থেকে স্টেশন মাস্টার আনা হচ্ছে সেসব স্থানে লোকবল কমে যাচ্ছে। এতে ঝুঁকিও বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী লোকবল পেলে কোনো সমস্যাই থাকবে না।

পূর্বাঞ্চল রেলেও স্টেশন মাস্টারের চরম স্বল্পতা রয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে স্টেশনগুলো চালু রাখার চেষ্টা হচ্ছে। এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, লোকবলের অভাবে রেলপথসহ বিভিন্ন দফতরে শতভাগ কাজ সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ১৫০ স্টেশন মাস্টার প্রয়োজন; কিন্তু নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়োগ বিষয়ে যে জটিলতা রয়েছে তা শিগগিরই সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, পূর্বাঞ্চল রেলে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে ৪১টি রেলওয়ে স্টেশন বন্ধ রয়েছে। নতুন করে আরও ২৬ জন স্টেশন মাস্টারকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেছি। এ মুহূর্তে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না হলে আরও অনেক স্টেশন বন্ধ হয়ে যাবে।

রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়েও চলছে অনিয়ম-দুর্নীতি। নিজেদের পছন্দমতো অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টারদের ২ বছর মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ২০১১ সাল থেকে। অনেকের বয়স হয়েছে, চোখে কম দেখেন- তারপরও তাদের নেয়া হচ্ছে। আর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা ২-৩ বার এ সুযোগ পেয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার অবসরের সময়ে যে টাকা বেতন পেতেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পরও সেই পরিমাণ বেতনই পাচ্ছেন। এদিকে কোনো অন্যায় বা ভুল করলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা না যাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই তারা স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছেন।

এ বিষয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জানান, দুইবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করেছি। আমরা যারা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করছি, অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই করছি। যেহেতু বয়স বেশি হয়ে গেছে, সেই ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুল হতে পারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই আমাদের চুক্তিতে নেয়া হচ্ছে। আমি কোনো টাকা দেইনি। তবে শুনেছি কারও কারও স্বাস্থ্য ঠিক না থাকার পরও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তাদের চুক্তিতে নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়াজাহানের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল ফোনে ১০ বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, চুক্তিতে নিয়োগ সম্পূর্ণ করেন এ দফতরের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। চুক্তিতে লোক নেয়ার বিষয়ে স্বজনপ্রীতি তো আছেই।

জানতে চাইলে রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান বলেন, লোকবল সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। ট্রেন চলাচল ঠিক রাখতেই চুক্তিভিত্তিতে রেল থেকে অবসরপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ লোকজন অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এটা না করলে তো ট্রেন পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়বে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, কোনো সমস্যাই থাকবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যেই নিয়োগ বিষয়ক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমরা দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করব। রেলে যে পরিমাণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তাতে লোকবল জরুরি হয়ে পড়ছে। আমরা নতুন করে ৪৭ হাজারের উপরে লোকবল চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠিয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করতে পারব।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT