আমাদের সময়ে হলকার হ্যাজ কাভার ছিলো তাও কাঠের তৈরি। একটির ওজন ছিলো ১৫-২০ কেজি।বর্তমানে স্টিলের অনেক হালকা, আবার টানা গিয়ার সিস্টেমও রয়েছে প্রায় ৪০% জাহাজে।
আমাদের সময় বিমের চাকা ছিলো না, কাঁধে বহন করে হ্যাজ খোলা লাগতো। তোমাদের সময়ে টানা রোলার সিস্টেম চালু হয়েছে। আবার কিছু জাহাজে বিম নেই। আমাদের সময়ে বস্তামাল নিজেরা খামাল করে সারিতে সাজাতে হতো। এখন বস্তা মাল নেই বললেই চলে।
আমাদের সময়ে মাস্টার, ড্রাইভার, সুপারভাইজার এর জামা কাপড় ধূয়ে দিতে হতো। এখন এই প্রচলন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আমাদের সময়ে মাস্টার ড্রাইভার সুপারভাইজার অনবোর্ড থাকলে অন্য নাবিকেরা পুরা সাইলেন্স হয়ে যেতাম। এখন তোমরা এন্ড্রয়েড সেট চালাও, গান বাজনা শুনো, বিনোদন করতে পারো। ইন্টারনেটে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারো গভীর সাগরে বসে।
আমাদের সময়ে বাঁশ দিয়ে লিড লাইন দিয়ে লাইনে চলাকালীন সময়ে একটু পর পর পানি মাপতে হতো। এখন ইকো সাউন্ডারের কারনে এই সিস্টেম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাদের সময়ে কুয়াশার দিনে জাহাজ চলাচলের সময়, ডিউটি ম্যান সামনে সার্চ লাইটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো শীতের মধ্যে। এখন ব্রীজ থেকে কন্ট্রোল করা হয়।
সিমেন্ট ক্লিংকার লোডের পরে গম বা সার, খাদ্য মাল লোড হবে। প্রতি মাসে ৫-৬ বার হ্যাজ সুইপিং করা লাগতো। এখন যে যেই মাল বহন করে, সে কোম্পানি একই প্রডাক্ট বহন করায় সুইপিং করা লাগেনা ৮০% জাহাজে।
আর কতো লিখবো? লিখতে গেলে কয়েকটি বই হয়ে যাবে। তবে মনে রাখতে হবে মাস্টার, ড্রাইভার হলো পিতার সমতুল্য। তারাই সকল নাবিকদের অভিবাবক। যদি তোমরা মা বাবার, শিক্ষকের খেদমত করতে জানো,তবে মাস্টার ড্রাইভারদেরকেও সম্মান করবে। তাদেরকে একটু সহযোগিতা করবে। কারণ, তাদের অফিস ও সকল প্রকার ম্যান্টেন্যান্সের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। কারণ, সেটা হলো মাসের শেষে তোমাদেরকে বেতনটি যেনো বুজিয়ে দিতে পারেন। আর তোমরা তাদের ঘন্টার সংকেত পাইলে এগিয়ে গিয়ে হয়তো একমুঠো ভাত, এক কাপ চা, এক গ্লাস পানি দিতে হবে। এইটুকু কষ্ট শিকার করতে শিখো। তবেই ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। ফেসবুক থেকে।
Leave a Reply