করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের অনুমতি দেওয়ার পর পর্যটনকেন্দ্রগুলোও শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভ্রমণপিপাসুরাও আসতে শুরু করেছে দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও বেড়েছে পর্যটকদের আগমন। এর মধ্যে পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এখানকার ‘তৈলাফাং’ ঝরনা। সম্প্রতি এই ঝরনার সন্ধান মিলেছে।
নয়নাভিরাম নতুন স্থানে বেড়াতে পর্যটকদের আগ্রহ সব সময় বেশি। বর্তমানে খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে এমনই একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে তৈলাফাং ঝরনা। পানছড়ি ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমানায় একটি গ্রাম কাতালমনি পাড়া। এই গ্রামে তৈলাফাং ঝরনার অবস্থান। ঝরনাটি প্রায় ৫০ ফুট উঁচু আর ২০ ফুট প্রশস্ত। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুদেরও নজর কেড়েছে ঝরনাটি।
যেভাবে যেতে হয় :তৈলাফাং ঝরনায় যেতে একাধিক পথ রয়েছে। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি হয়ে রয়েছে একটি পথ। আবার পানছড়ি উপজেলার মরাটিলা দিয়েও তৈলাফাং ঝরনায় যাওয়া যায়। তবে ঝরনাটিতে পৌঁছতে পার হতে হয় দুর্গম দুটি পাহাড়। খাগড়াছড়ি থেকে সিএনজি, পিকআপ, মোটরসাইকেলে মাটিরাঙ্গা বাজার হয়ে তবলছড়ি কিংবা পানছড়ির মরাটিলার পর প্রিন্সিপালের বাগান পার হয়ে ভাইবোনছড়া সংযোগ সড়কে গিয়ে নামতে হয়। সেখান থেকে কাতালমনি পাড়ার দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার। এটি পুরোটাই মেঠোপথ। বৃষ্টি হলে হেঁটে যেতে হয়। অন্য সময় মোটরসাইকেলে চার কিলোমিটার গিয়ে বাকি পথ হেঁটে যেতে হয়। ভাইবোনছড়া সংযোগ সড়ক থেকে মেঠোপথ ধরে বৌদ্ধ বিহার এলাকায় পৌঁছে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই ঝরনায় পৌঁছার পথ দেখিয়ে দেবে। তবে এই পথটুকু অত্যন্ত দুর্গম। ফলে পর্যটকদের বাড়তি সতর্কতা নিতে হয়।
যেহেতু এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম, ফলে দোকানপাট নেই। এ কারণে ভ্রমণপিপাসুদের অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে পানিসহ প্রয়োজনীয় খাবার। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় বৃষ্টির দিনে না যাওয়াই ভালো। তৈলাফাং ঝরনা দর্শনে রৌদ্রময় দিনেই যাওয়া ভালো। তৈলাফাং ঝরনার পাশেই রয়েছে আরো দুটি ঝিরি-ঝরনা। ছোট আকারের এই দুটি ঝরনার অবস্থান তৈলাফাং ঝরনার ৫০ মিটারের মধ্যে। এসব ঝরনার চারপাশে উঁচু-নিচু পাহাড়ে স্থানীয় লোকজন জুম চাষ করে। সেসব দৃশ্যও ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করছে।
সম্প্রতি উল্টাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বেড়িয়ে আসেন ঝরনাটি। তিনি বলেন,‘এই করোনাকালে তৈলাফাং ঝরনার কথা শুনে ঘরবন্দি অবস্থা থেকে একটু প্রশান্তির জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য স্থানটি বেশ। ঝরনায় পৌঁছতে দুর্গম পথ পার হতে হয়। পাহাড়, ঝরনা প্রিয় যাদের, স্থানটি তারা বেশ উপভোগ করবেন।’
পানছড়ি উপজেলার উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণাংকর চাকমা সপরিবারে গিয়েছিলেন তৈলাফাং ঝরনা দেখতে। তিনি বলেন,‘ওই ঝরনায় যাওয়ার পথ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।’
Leave a Reply