দুই লিজ বিমানেই বেসামরিক বিমান পরিবহনকে লোকসান দিতে হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা। এ দু’টি বিমানের জন্য প্রতি মাসে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এ দ’ুটি বিমান চালিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২২ কোটি টাকা আর খরচ হয়েছিল ৩৩০০ কোটি টাকা। ফলে লোকসান হয় ১১০০ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে লিজ নেয়া বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর বিমান দু’টির ইঞ্জিন বারবার নষ্ট হলেও অজ্ঞাত কারণে লিজ বাতিল করা হয়নি। উপরুন্ত ইঞ্জিন ঠিক করার সময় মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান ও লিজ প্রদানকারীকে উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে। লিজ প্রক্রিয়ার এসব অস্বচ্ছতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। তবে গত মার্চ মাস মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দায় দেনা থেকে মুক্তি পায় বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সংসদ ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৪তম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার বৈঠকে অংশ নেন।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক কমিটিকে জানান, বিমান লিজ সংস্কৃতি থেকে একেবারে বেরিয়ে আসতে চাইছে। বিমান বহরের জন্য ২৪ মিলিয়ন ডলার নতুন তিনটি ড্যাশ-৮ বিমান কেনা হয়েছে। এর মধ্যে দ’ুটো বিমান এ বছরের মধ্যে বাকিটা জানুয়ারিতে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। বৈঠকে আরো জানানো হয়, বিমানের রাজস্ব আয় কমেছে। তারপরও বিমান তার কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করেনি। বেতন কিছুটা কাটছাঁট করে সব কর্মীকে ধরে রাখা হয়েছে। গত কয়েক বছর আগে কয়েকটি নতুন এয়ারক্রাফট কেনা হয়েছিল। সেসব বিমান সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করেছে। এছাড়া করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিমান সরকারের কাছ থেকে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, বাকি টাকা খরচ হবে না মর্মে তিনি কমিটিকে অবহিত করেন।
সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল, ২০২০, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজিন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ সালের বাজেট ব্যবহার এবং বৈশ্বিক করোনা মহামারি প্রতিরোধে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। কমিটি অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে আধুনিক ও যুগোপযোগী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করে। বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply