রাজধানীর লালবাগের নবাবগঞ্জ সেকশন বেড়িবাঁধে তুচ্ছ ঘটনায় ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক চালক ও লেগুনার হেলপারদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইজিবাইক চালকদের দফায় দফায় হামলায় সাত লেগুনা শ্রমিক আহত হয়েছেন। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত লেগুনার শ্রমিক হাবিবসহ তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যালে এবং অন্যদের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আহত অন্যরা হলেনÑ ঝন্টু, ইমরান, জাহিদ, কালু, শাওন ও রাজন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় লালবাগের নবাবগঞ্জ সেকশন বেড়িবাঁধের লেগুনা স্ট্যান্ডে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা বাবুবাজারগামী ব্রাদার্স পরিবহনের একটি বাস লেগুনা স্ট্যান্ডে থেমে যাত্রী তোলার চেষ্টা করে। এতে আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে লেগুনার এক শ্রমিক বাসটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করে। এ নিয়ে ওই বাসের হেলপার লেগুনা শ্রমিকের সাথে তর্কে জড়িয়ে হাতাহাতি শুরু করে। তখন বাসের হেলপারের পক্ষ নিয়ে সেকশন টু নিউমার্কেট রুটে চলাচলকারী ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের এক চালক এসে লেগুনার শ্রমিককে মারধর করে। এ নিয়ে লেগুনা শ্রমিকরা ঘটনাস্থলে জড়ো হলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার একপর্যায়ে ইজিবাইকের ওই চালক তার অন্য সহকর্মীদের ডেকে আনে। তখন কথা কাটাকাটির মাধ্যমে দু’গ্রুপই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় লাইন পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ইজিবাইকের লাইনম্যান পারভেজের নেতৃত্বে মহিউদ্দিন, ইমন, টুটুল, খালেক, সিরাজ, মিলন, উজ্জ্বল, মনির, শাকিলসহ ২০-৩০ জন ধারালো ছোরা, রড, বাঁশ, লাঠি নিয়ে লেগুনার শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে লেগুনার শ্রমিক হাবিবের মাথা ফেটে যায়। এ খবরে লেগুনার মালিক-শ্রমিকরা ঘটনাস্থলে জড়ো হলে ফের উত্তেজনা শুরু হয়। এর জেরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্য দিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এতে হাবিব, ঝন্টু, ইমরান, জাহিদ, কালু, শাওন ও রাজন আহত হন। খবর পেয়ে নবাবগঞ্জ সেকশন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রায়হানের নেতৃত্বে ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল ও লালবাগ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষের এ ঘটনায় আহত সাতজনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলেও গুরুতর আহত হাবিবকে ঢাকা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। তার মাথায় ৩৮টি সেলাই লেগেছে বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মীরা।
লালবাগ থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসি কে এম আশরাফ উদ্দীন জানান, গাড়িতে যাত্রী তোলা নিয়ে তর্কের জেরে হাতাহাতির এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে দেয়। এ ব্যাপারে লেগুনা ও ইজিবাইকের মালিক-শ্রমিকরা বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন ওসি কে এম আশরাফ উদ্দীন।
Leave a Reply