করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই ভয়াবহ রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিপরীত নয় এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোও। এরই মধ্যে পাইলটদের বেতন-ভাতা কমানোসহ নানা পরিকল্পনা করেছে তারা। তাতেও ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারছে না। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কাটা সামাল দেওয়া প্রায় অসম্ভব হবে বলে মনে করছেন কাতার এয়ারওয়েজের সিইও আকবর আল বাকের। তিনি এয়ারলাইন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। এয়ারলাইন কোম্পানিগুলোর জন্য সামনে আরও ভয়াবহ দিন আসছে বলে মনে করছেন তিনি।
‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি খুব বেশি দূরে নয়। আর এটা কেবল কাতার এয়ারওয়েজের জন্য নয়, সকলের জন্যই। ইউরোপে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি খারাপ হতে যাচ্ছে। কারণ, করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ আসছে। আমার মনে হয়, এটা প্রথমটার চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে।’ কাতার এয়ারওয়েজের সিইও আকবর সিএনবিসির সঙ্গে এক ভিডিও সাক্ষাতকারে এমনটাই বলেছেন। বাণিজ্যিকভিত্তিতে চলমান ৪৩টি এয়ারলাইন এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। ট্র্যাভেল ডাটা কোম্পানি সিরিয়ামের তথ্যমতে, ৪৮৫টি বিমান এরই মধ্যে বেকার বসে আছে। অথচ গত ১০ বছরে এয়ার ট্র্যাফিক দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিল। দিনে দিনে এই ব্যবসা বেড়েই চলছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে যাত্রী পরিবহন হয়তো আরও কমিয়ে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনেক এয়ারলাইন কোম্পানিই বন্ধ হয়ে যাবে। আর কিছু এয়ারলাইন কোম্পানি মনোপলি পেয়ে যাবে। এমনটা হলে যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ করাটা কঠিন হয়ে যাবে।
কাতার এয়ারওয়েজ এরই মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১৬ হাজার ১০২ কোটিরও বেশি! করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রী এমনিতেই কমে গেছে। ভবিষ্যতে এই সংখ্যাটা আরও কমবে বলে মনে করছেন কাতার এয়ারওয়েজের সিইও। তার মতে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো ২০২৪ সালের আগে লাভের মুখ দেখবে না। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্র্যান্সপোর্ট এসোসিয়েশন (আইএটিএ) সতর্ক বার্তা দিয়ে বলছে, এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। ২০২১ সালেও ক্ষতির ধারাটা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আইএটিএ।
সরকারি সহায়তা না পেলে শিগগিরই এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো হারিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন এয়ারলাইন বিশেষজ্ঞ আকবর।
Leave a Reply