1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
আগামীকাল থেকে বিরতিহীন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ শিপিং কর্পোরেশনের বহরে ২১টি জাহাজ যুক্ত হবে : নৌপ্রতিমন্ত্রী টাঙ্গাইলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে দুর্বৃত্তের আগুন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে আর থাকবে না’ কক্সবাজার-দোহাজারী রেল লাইন : প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন, শেষ হলো অপেক্ষা সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫% বাঁক ও ক্রসিংয়ে, বাঁক সোজা করার সুপারিশ সংসদীয় কমিটির বঙ্গবন্ধু টানেলে রেসের ঘটনায় ৫ গাড়ি জব্দ : দুজন গ্রেপ্তার অক্টোবরে ৪২৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জন নিহত, ড্রাইভার মারা গেছে ১২০ জন : যাত্রী কল্যাণ সমিতি বিমানের কোটি কোটি টাকা পাওনা রয়েছে এমন অনেক ট্রাভেল এজেন্সির অস্তিত্ব নেই : প্রতিমন্ত্রী মেট্রো রেলে আধা ঘন্টায় উত্তরা থেকে মতিঝিল

লোকোশেড ও স্টিম ইঞ্জিনের ইতিহাস এখন অনেকেরই অজানা

রেলপথ রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি, বগুড়া

সান্তাহার জংশন স্টেশনের এক সময়ের জাঁকজমকপূর্ণ লোকোসেডের কয়লা ও ফারনেস তেলের স্টিমইঞ্জিনের ইতিহাস অনেকের জানা থাকলেও নতুন প্রজন্মের কারও জানা নেই এর ইতিহাস। প্রায় দেড়শ’ বছর আগে সান্তাহার জংশন স্টেশন স্থাপিত হবার পর এ জংশনকে ঘিরে এখানে রেলওয়ের স্বনামধন্য অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছিল। যার অনেক কিছুই এখন নেই। এসব প্রতিষ্ঠান যারা দেখেছেন তারা সেসব স্মৃতির কথা বলতে পারলেও নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানে না সে সব ইতিহাস।

দেড়শ’ বছর আগে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষিণে খুলনা ও উত্তরে চিলাহাটি এবং বুড়িমারিও ভারতের শিলিগুঁড়ি এবং আসামের মধ্যে রেলযোগাযোগ চালু করা হয়। সেসময় কয়লা ও ফারনেস তেলের ও পানি দ্বারা স্টিমইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলাচল করতো। ইঞ্জিনগুলোতে স্টিলের বয়লারে তেল ও পানির টাঙ্কি ছিল। কয়লা বা ফারনেস তেল দ্বারা পানি বয়েল হয়ে বাস্প তৈরী হয়ে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলাচল করতো। ফলে এ ইঞ্জিনগুলোকে স্টিমইঞ্জিন বলা হতো।

সেই সব ইঞ্জিন দিয়ে সান্তাহার জংশন স্টেশনের উপর দিয়ে ভারতের দার্জিলিং মেইল ট্রেন চলাচল করত। সে সময় ইঞ্জিনের কয়লা, তেল পানির প্রয়োজনে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, রাজবাড়ী, রুপসা, ঈশ্বরদী, উত্তরাঞ্চলের সান্তাহার, পার্বতীপুর, লালমনিরহাটে লোকোসেড তৈরী করা হয়। এইসব সেডে কয়লা, তেল পানির পাশাপাশি ইংল্যান্ড ও ব্রিটিশের তৈরী ইঞ্জিনের ত্রæটি মেরামত করা হতো বলে সচক্ষে দেখা অনেকে জানিয়েছেন।
সে সুবাদে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে রেলওয়ের প্রায় ৫০ একর জমির উপর সান্তাহারে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে লোকোসেড তৈরা করা হয়। এ সেডে ইঞ্জিন মেরামতের জন্য বেশ কয়েকটি ডগ, তেল ও পানির বড় বড় টাঙ্ক, কয়লা রাখার ডিপো, লেদ, কামারশালাসহ বিভিন্ন ধরণের ইঞ্জিন মেরামতের সামগ্রী তৈরীর কারখানা স্থাপন করা হয়। এ কারণে এ সেডে সব সময় ৪০ থেকে ৫০টি ইঞ্জিন থাকত। আশির দশক পর্যন্ত এসব ইঞ্জিনের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো।

এ ছাড়া এ জংশনকে ঘিরে এখানে তৈরী করা হয় ট্যানসি মেন্ট ইয়ার্ড। এ ইয়ার্ডে ব্রডগ্রেজ ওয়াগান থেকে মিটারগেজ ওয়াগনে মালামাল পারাপার করা হতো। তৈরী করা হয় পাওয়ার হাউস। এই পাওয়ার হাউস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত দিয়ে রেল স্টেশন লোকোসেড, ইয়ার্ড, আবাসিক এলাকাসহ রেলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলো জ্বালানো হতো। রাতের বেলা সেই আলোই আলোকিত হতো সান্তাহার শহর।

সেসময় সান্তাহারের ঝকঝকে আলো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষের সমাগম ঘটতো। ইঞ্জিনগুলোর ঝক ঝক শব্দে আর পুত পুত হুইসেলে মুখরিত থাকতো সান্তাহার জংশন শহরসহ আশপাশের এলাকা। সেই সাথে যে এলাকা দিয়ে ট্রেন চলাচল করতো সেইসব এলাকা ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় আকাশ কালো মেঘের মতো রুপ নিতো। আবার ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে যেতো।

কালের পরির্বতন ও বিদেশ থেকে ডিজেল ইঞ্জিন আনায় কদর কমে যায় কয়লা ও ফারনেস তৈলের স্টিম ইঞ্জিনের। এক পর্যায়ে কোটি কোটি টাকা মূল্যের ওইসব সব ইঞ্জিন নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এর সাথে সান্তাহার লোকোসেডের মূল্যবান লেদ, তৈল পানির টাঙ্কিসহ ইঞ্জিন মেরামতের সামগ্রী এমনকি জমি ছাড়া সব অবকাঠামো নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রি করা হয়েছে পাওয়ার হাউজের বিশাল বিশাল জেনারেটর। এতে সান্তাহার জংশন স্টেশনের লোকোসেডের কয়লা ও ফারনেস ওয়েলের স্টিম ইঞ্জিনের ইতিহাস অনেকের জানা থাকলেও নতুর প্রজন্মের অনেকের অজানাই থেকে গেছে।

প্রায় দেড়শ’ বছর আগে সান্তাহার জংশন স্টেশন স্থাপিত হবার পর এ জংশনকে ঘিরে এসব ছাড়াও এখানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কেন্দ্রীয় খাদ্যগুদাম, গমও রাইস সাইলো, ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রসহ সরকারী সনামধন্য অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। এ জংশনের সনামধন্য অনেক প্রতিষ্ঠান এখন আর নেই। কয়লা তেলের স্টিমইঞ্জিন লোকোসেড, পাওয়ার হাউস, ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড যারা দেখেছেন তাদের কেউ কেউ এখনও বেঁচে আছেন। ইে সব বয়স্ক ব্যক্তিরা মারা গেলে এসব ইতিহাস বলার মতো আর কেউ থাকবে না।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে ব্রিটিশ আমালের স্মৃতি স্বরুপ সান্তাহার লোকোসেডের একটি ইঞ্জিন রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT