আগামী ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট ডেকেছে নৌযান শ্রমিকদের ছয়টি সংগঠনের জোট নৌ শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদ। নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও মাসিক খাদ্যভাতা প্রদানসহ ১৫ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদপ্তরের সামনে এক মানববন্ধন থেকে জোটের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন এই ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করেন। নৌযান শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবিতে আরও রয়েছে- নৌযানের মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ (চালকদের যোগ্যতা নির্ধারণী) পরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নৌ অধিদপ্তর কর্তৃক শ্রমিকদের নানা ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান ও কল্যাণ তহবিল গঠন প্রভৃতি।
গতকালের মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র ও খাদ্যভাতা প্রদান, সার্ভিস বুক খোলা, কল্যাণ তহবিল গঠন, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের অধীনে অনুষ্ঠিত মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক অকারণে শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
এ সময় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ ওমর ফারুক বলেন, ১৫ দফা দাবির সমর্থনে তারা ইতোমধ্যে শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবাই আশ্বাস দিলেও কোনো দাবিই আজ পর্যন্ত পূরণ হয়নি। এ অবস্থায় ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ তাদের সামনে খোলা নেই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন নৌযান শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ঢাকা নদীবন্দর শাখার সাধারণ সম্পাদক শোয়েবুর রহমান, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার, দপ্তর সম্পাদক কবির হোসেন এবং লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন মোংলা বন্দর শাখার কার্যকরী সভাপতি ফিরোজ মাস্টার।
এর আগে উল্লিখিত দাবিসহ ১১ দফা দাবিতে ২০ অক্টোবর মধ্যরাত (১৯ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিট) থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। নৌ খাতের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা তারও চান। কিন্তু শ্রমিকদের পেটে খিদা থাকলে এবং প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলে আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প থাকে না।
তিনি বলেন, তাদের প্রতিটি দাবি যৌক্তিক। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নৌ শ্রমিকদের জন্য কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ফিশারিসহ অন্যান্য বেসরকারি খাতের নৌ শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন, মাসিক খাদ্যভাতা প্রদান, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের বিভিন্ন পরীক্ষায় অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এসব দাবি পূরণ না হলে নৌ খাত কখনও স্থিতিশীল হবে না।
Leave a Reply