আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট শুরু হচ্ছে। নৌযান শ্রমিকদের ছয়টি সংগঠনের জোট নৌ-শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদ ১৫ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে এই ধর্মঘট ডেকেছে। অন্যদিকে, ১১ দফা দাবিতে আজ রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।গত ১৩ অক্টোবর রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদপ্তরের সামনে নৌ-শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এর আগে ২০ অক্টোবর মধ্যরাত (১৯ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিট) থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
নৌ-শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের ১৫ দফা দাবিতে রয়েছে- নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও মাসিক খাদ্যভাতা প্রদান, সার্ভিসবুক খোলা, স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান ও কল্যাণ তহবিল গঠন, নৌযানের মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ (চালকদের যোগ্যতা নির্ধারণী) পরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নৌ অধিদপ্তর কর্তৃক শ্রমিকদের নানা ধরনের হয়রানি বন্ধ করা প্রভৃতি। আর নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবিতে রয়েছে শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিয়োগপত্র প্রদান, ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নৌ-শ্রমিকদের জন্য কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড, ফিশারিসহ অন্যান্য বেসরকারি খাতের নৌ-শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন, মাসিক খাদ্যভাতা প্রদান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের বিভিন্ন পরীক্ষায় অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ করা প্রভৃতি।
নৌ-শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৫ দফা দাবি আদায়ে তারা এরই মধ্যে শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবাই আশ্বাস দিলেও কোনো দাবিই আজ পর্যন্ত পূরণ হয়নি। এ অবস্থায় ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ তাদের সামনে খোলা নেই।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। নৌ সেক্টরের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা তারাও চান। কিন্তু শ্রমিকদের পেটে খিদে থাকলে এবং প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলে আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প থাকে না।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এগুলোর কয়েকটি দাবি পূরণ হলেও অমীমাংসিত ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ২০১৮ সালে আবারও শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন ফেডারেশন নেতারা। যার অনুলিপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, নৌযান মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনসহ সংশ্নিষ্ট সব দপ্তরে দেওয়া হয়। এরপর একই বিষয়ে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রম ও কর্মসংস্থান অধিদপ্তর থেকে সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন নেতাদের।
Leave a Reply