মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড পেট্রল জাহাজ পাঠাচ্ছে পশ্চিম প্রশান্ত (ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক) মহাসাগরীয় এলাকায়। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ক্রমবর্ধমান চীনা আধিপত্য ঠেকাতেই এই পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নিরাপত্তা উপদেষ্টা একথা জানিয়েছেন মিডিয়াকে।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রায়েন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে স্ট্র্যাটেজিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঘাঁটি গাড়ছে। প্রশান্ত মহাসাগরে নিজেদেরকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অবৈধ ফিশিং, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অন্য দেশের পণ্যবাহী জাহাজকে হয়রানি করা আমাদের সার্বভৌমত্বকে হুমকি দেওয়ারই শামিল। এর মাধ্যমে প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো এবং এই এলাকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই এলাকায় কোস্ট গার্ড জাহাজের মাধ্যমে খবরদারি বাড়িয়ে মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষমতার ভারসাম্যও রক্ষা করবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মিলিত শক্তি চীনাদের আধিপত্যকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি দক্ষিণ চীন সাগরেও চীনের একাধিপত্য মেনে নিতে নারাজ এই যৌথ শক্তি। আজ (রবিবার) থেকে পাঁচদিনের ভারত সফরে যাচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেই। ভারতকে সাথে নিয়ে চীনা আধিপত্য রুখবার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত জুলাইতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনাদের ব্যবহার ছিল রীতিমতো ত্রাসের। চীনা মিলিটারির ওপর অভিযোগ উঠে, তারা একটি ভিয়েতনামি ফিশিং বোটকে ডুবিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি মালয়েশিয়ান তেল ও গ্যাসবাহী জাহাজকে হয়রানি করেছে। চীনা ফিশিং বোটের একটি ফ্লিটকে ইন্দোনেশিয়ার বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় এসকর্ট করে নিয়ে যায় চীনা মিলিটারি। এসব অভিযোগ উঠার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় খবরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় স্থায়ীভাবে কোস্ট গার্ডের জাহাজ রাখার ব্যাপারেও ভাবছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ফিলিপাইনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। চীন এই সাগরের পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করছে। বাকি দেশগুলোও কিছু কিছু অংশের দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ফ্রিডম অব নেভিগেশন’ অপারেশনের আওতায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্টার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন রবার্ট ও’ব্রায়েন।
Leave a Reply