এক প্রকার খারাপ লাগা থেকেই এই লিখা। হিরো সার্ভিস পয়েন্ট প্রয়োজনের তুলনায় কম? নাকি বাইক বেড়ে গেছে?
যখনই সার্ভিস এর জন্য যাই, বলে কিনা বাইক সকালে নিয়ে এসে রেখে যাবেন, দুপুর/ বিকালে এসে নিয়ে যাবেন।
বাইক শখে কেনার লোক তো কম, কজেই কেনা হয়। লোকবল না বড়িয়ে ক্লায়েন্ট দের কষ্ট দেয়ার মানে নাই।
ঘটনা ১ঃ
সময় পাচ্ছিলাম না অফিসের কাজের চাপে, এদিকে সারভিসে নেয়া ও জরুরি। এক বন্ধু কে দিয়ে পাঠালাম। তেমন কোনো কাজ ছিলো না, তাই কোনোমতে দেখে দিয়ে দিলো।। এটা স্বাভাবিক ভাবেই নেয়া যায়। কাজ না থাকলে অহেতুক বাইক ঘাটাঘাটি করার প্রয়োজন নাই।
পরের বার আমি ই গেলাম টুকটাক কিছু কাজ নিয়ে। ৪/৫ দিন কথা বলে ফ্রি টাইম বের করেই গেলাম।
স্টক বাল্ব চেঞ্জ করে LED লাগানো, কিন্তু মান ভালো না হওয়ায় আলো কম। ফগ লাগাবো। ৩০০ টাকা বাড়তি দেয়ার পরেও এক মেকানিকের উত্তরঃ আজ অবধি এমন লো কোয়ালিটি দেখি নাই।
জানতে চাইলাম কিসের লো কোয়ালিটি? লাইট না অন্য কিছু? সরাসরি উত্তরঃ টাকা আর কি।
এরই মধ্যে আরেক মেকানিক বিভিন্ন কথায় বলছিলো যে আপনার তো LED লাগানো আছে। বললাম আলো কম, শহরে যেমন তেমন করে চালানো যায়, হাইওয়ে রাইডে কিছু দেখি না।
মেকানিকের উত্তরঃ আরো কিছু লাগালেও চোখে দেখবেন না আপনি।
এর কদিন পরে টেপিট/টেবিড এডজাস্ট এর দরকার পরলো, ইঞ্জিন থেকে টির-টির করে একটা সাউন্ড আসছিলো। তখন কুমিল্লায় ছিলাম, শনিবার হওয়ায় এবং দুপুরে উনারা অনেক কাজের ঝামেলায় ছিলেন বিধায় বললেন যে একটু সময় লাগবে। আমার হাতে সময় ছিলো না, যেহেতু একটা কাজ সেরে ওইদিন ই চট্টগ্রাম ফিরবো। বললো তাহলে চট্টগ্রামে দেখিয়ে নিয়েন। ওই অবধি সমস্যা হবে না। কুমিল্লার ওদের ব্যবহার শুনেও মন শান্তি।
চট্টগ্রামে আসার পরে সেই হেড মেকানিক কে আওয়াজের ব্যাপারে বলার পরে বলে কিনা পরের সারভিসে করে নিয়েন। বেশ কিছু কথা হওয়ার পরে খুব অনিহার সাথে সে কোনো ভাবে কি যেনো করে দিলো। এর পর থেকে বাইক চালাই আগের শান্তি আর নাই।
বাইক নিয়ে গেলেই এদের একটা এক্সপেকটেশন / মনের শক্ত ইচ্ছা হইলো কাষ্টমার এর পকেট ভড়া টাকা, আর তাদের কে বেশি করে দিয়ে দিতেই হবে।
আরে বাপ খুশি মনে সবাই ই কিছু না কিছু দেয়, তবে সেটা মনে হয় এই মেকানিক গুলোর মনপুত হয় না।
ঘটনা ২ঃ
আজকে গেলাম গত সাপ্তাহ খানেক আগে থেকে বাইকের পিকাপ ছেড়ে ছেড়ে দেয়, কিছুক্ষণ চলার পরে ঠিক হয়, আবার অফ করে রাখার কিছুক্ষণ পরে চালু করলে একই অবস্থা। চেইন বক্সেও আওয়াজ হয়, চেইন লুজ হয়ে গেছে। খুব একটা ঝামেলার কাজ না।
৪. ৪৫ এ উনাদের এখানে নিয়ে যাওয়ার পরে উত্তর টা কমনঃ সকালে দিয়ে গেলে বিকালে নিয়ে যাবেন।
এখন সম্ভব না।১৫ মিনিট পরে বন্ধ হয়ে যাবে সব কিছু। ৫টায় সারভিস সেন্টার বন্ধ?? অথচ তখনো *আমি আরো কিছু লাগালেও চোখে দেখবো না* বলা সেই মেকানিক চেয়ার বসে ছিলো।। আর তার কথার ধরনই হয়তো মাস্তান টাইপ। ব্যস্ত থাকতেই পারে সবাই, তাই বলে ছোট কাজের জন্য সকালে আসেন বিকালে নেন?
এর আগে বাজাজের ডিসকভার চালাতাম, যেটার rpm & fuel টিউনিং নিজেই মিলিয়ে নিতে পারতাম।
হাংক এর টা নিজে ঘাটাঘাটি করে দেখতে চাই নি। তবে পরিস্থিতি যা দেখলাম, তাতে হাংক এর খুটিনাটি কাজ ও নিজের ই শিখে নিতে হবে মনে হচ্ছে। যেহেতু ভালো বাইক এই হাংক, মেকানিক এর উপর জিদ করে লসে সেল করার প্রশ্নই আসে না।
সারভিস পয়েন্টের ম্যানেজার ভালো মানুষ, কথা বারতায় একটু ভালো ভদ্র। আজকে তার কথা ও একটু করকস ছিলো, হইতেই পারে, মানুষের কাজের ঝামেলায় মন মেজাজ একেক রকম থাকতেই পারে।। কিন্তু সেটা ক্লায়েন্ট এর উপর আসলে তো সমস্যা।
ম্যানেজার কি করবে, যদি তার অধিনস্ত স্টাফ ই বেয়াদব হয়, এটা আমার জানা নাই।
এই হচ্ছে চট্টগ্রাম হিরোর নিজস্ব সার্ভিস সেন্টারের অবস্থা।
বিকল্প আছে চৌমুহনী বাইক মিউজিয়াম এর টা, ওদের এখানে রেন্ডম ৮-১০টা বাইকের সিরিয়াল লেগেই থাকে, তাও এরা কিছুটা কো-অপারেশন করার চেষ্টা করে।। কিন্তু নিয়ম এখানেও আছে, সকালে দিয়ে যাবেন, বিকালে নিয়ে যাবেন।।
হাংক বাইক টা আমার বাজেট রেঞ্জ এ ১৫০সিসি তে ভালো বাইক। বেশ কিছু বিষয় নিয়া আপসেট হইলেও এর সিটিং পজিশন, রাইডিং কমফোর্ট, ব্যালেন্সড ব্রেকিং আমার ভালোই লাগছে।
সারভিস করতে কুমিল্লা নিয়ে যাবো ভাবছি। রাইড ও হবে, কাজ ও হবে। কাজ না হইলেও ভালো আচার ব্যবহার এ মন ভরবে। তবে তাদের কে ২ঘন্টা ধরে অন্য কাজ করতে দেখে যা বুঝলাম, কাজেও হতাশ হবো না আশা করি।
আর খুটিনাটি নিজেই শিখে নিতে হবে / বাইরে থেকেই করাই নিবো।। জমিদার পুত্র দের চেহারা দেখে ২টা কথা শুনতে চট্টগ্রাম মুরাদপুরস্থ হিরোর নিজস্ব সারভিস সেন্টারে আর যাবো না।
এত কিছু লিখার একটাই কারন, হিরো ম্যানেজমেন্ট এর কারো নজরে যদি আমার এই লেখা টা আসে, তাহলে ২টা অনুরোধ করবো।
১, প্লিজ, আপনাদের সারভিস পয়েন্ট বাড়ান / লোকবল বাড়ান, যেভাবেই আপনাদের সুবিধা হয়, তাও মানুষকে কষ্ট থেকে বাচান।
২, মেকানিক দের কাজের ট্রেইনিং এর পাশাপাশি আচার ব্যবহার ও কিছু শেখাবেন প্লিজ।
Leave a Reply