ভারতের নতুন এয়ারলাইনস ভিসতারা ঢাকায় ফ্লাইট শুরু করছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এয়ার বাবল চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে এ ফ্লাইট চলবে। ওইদিন দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিসতারার ফ্লাইটের উদ্বোধন করবেন বেসামরিবক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন ভারতীয় হাইকমিশনার দিরাজ দোরাইস্বামী, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, মেম্বার (অপস) এয়ার কমোডর মো. খালিদ হোসেন, ভিসতারার প্রতিনিধি কাইজাদ পেসি পোস্টওয়াল্লা, ঢাকার জিএসএ মাস ট্রাভেলস অ্যান্ড টুরসের কর্ণধার সোহাগ হোসেন ও বিমানবন্দর পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএস তৌহিদ উল আহসান। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে দিল্লি থেকে প্রথম ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করবে এবং ৮০ জন যাত্রী নিয়ে সাড়ে ১০টায় আবার দিল্লি ফিরবে। আপাতত বাবল এয়ার চুক্তির আওতায় সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার দুটি ফ্লাইট চলাচল করবে। আসবে ৯টায়, যাবে ১০টায়। দ্য ক্যারিয়ার, টাটা সন্স এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি যৌথ উদ্যোগে গঠন করা হয় এই এয়ারলাইনস। ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মধ্যে প্রথম উদ্বোধনী ফ্লাইট চালু করা হয়। বছর শেষ না হতেই এক মিলিয়নের বেশি যাত্রী বহন করে। ভিসতারা, ভারতের অভ্যন্তরীণ যাত্রাপথে প্রিমিয়াম ইকোনমি সেবা প্রদানকারী প্রথম এয়ারলাইনস। এয়ারলাইনসটি ভারতের টাটা সন্স এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের যৌথ উদ্যোগে (জেভি) ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ উদ্যোগটি ছিল ১৯৩০ সালে টাটা এয়ারলাইনসের পর এয়ারলাইন সেক্টরে টাটার দ্বিতীয় প্রধান বিনিয়োগ। টাটা বিমান পরে এয়ার ইন্ডিয়াতে পরিণত হয় এবং পরবর্তীকালে একে জাতীয়করণ করা হয়। যৌথ কোম্পানিটি ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট এর ব্র্যান্ড পরিচয় ভিসতারা নামে পরিচিত হয়ে উঠে। নামটি সংস্কৃত শব্দ ভিসতার থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে ‘সীমাহীন বিস্তৃতি’। বিমান নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ ১৫ হতে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তার বিমান পরিচালনার লাইসেন্স লাভ করে এবং ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি তার কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে, ভিসতারার নতুন অফিস সেক্টর ৪৩, ওয়ান হরাইজন সেন্টার টাওয়ার, গুরগাঁও, যা দিল্লির একটি স্যাটেলাইট শহর সেখানে স্থানান্তর করা হয়। ভিসতারার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে ফি তেইক ইয়ে এবং প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিও) হিসেবে জিয়াম মিং তোংহকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরা দুজনই সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ভাস্কর ভাট, টাটা কোম্পানির আরেকটি প্রতিষ্ঠান টাইটানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রসাদ মেনন অবসর নেওয়ার পর চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন। আসাম, দিল্লি, গোয়া, গুজরাট, জম্মু এবং কাশ্মীর, কর্নাটক, কেরালা, মহারাষ্ট্র ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ভিসতারা।
কেবিন বিজনেস শ্রেণির একটি পূর্ণ সেবাদানকারী বাহক হিসেবে ভিসতারা ১৬টি বিজনেস শ্রেণির আসন প্রদান করে। বিজনেস শ্রেণির আসনগুলো ৪২ ইঞ্চি উঁচু এবং ২০.১২ ইঞ্চি চওড়া। বর্তমানে কোনো আসনের সঙ্গে এলসিডি স্ক্রিন সংযুক্ত নেই। কিন্তু এই শ্রেণির যাত্রীদের জন্য ট্যাবলেট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। প্রিমিয়াম ইকোনমি ক্লাস ভিসতারা ইন্ডিয়ায় প্রথম এয়ারলাইন যা দেশীয় বাজারে প্রিমিয়াম ইকোনমি শ্রেণি চালু করে। বর্তমানে এটি ৩৬টি প্রিমিয়াম ইকোনমি আসন সুবিধা প্রদান করে। প্রিমিয়াম ইকোনমির প্রতিটি আসন ৩৩ থেকে ৩৬ ইঞ্চি উঁচু এবং ১৮ ইঞ্চি চওড়া। ২০১৬ সালের মার্চ হতে ভিসতারা একমুখী ওয়াইফাই সংযোগ সুবিধার মাধ্যমে সরাসরি বিনোদনমূলক অডিও, ভিডিও কিংবা অন্যান্য ফাইল যাত্রীদের ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইসে (ট্যাবলেট এবং স্মার্ট ফোন) প্রদান করা শুরু করেছে। বিজনেস শ্রেণির যাত্রীদের জন্য বিনোদন বিষয়বস্তু সমৃদ্ধ ট্যাবলেট সুবিধা প্রদান করা হয়। ভ্রমণাবস্থায় যে খাবার পরিবেশিত হয়, তা তাজসেটস এয়ার ক্যাটারিং দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। এর দায়িত্বে রয়েছেন শেফ অরুণ বাত্রা, আগে যিনি তাজ হোটেল গ্রুপের একজন শেফ ছিলেন। ভিসতারা প্রতিটি কেবিনের জন্য দিনের বিভিন্ন সময়ে ব্রেকফাস্ট, জলখাবার, লাঞ্চ এবং ডিনার এই খাবারগুলো পরিবেশন করে। আমিষ কিংবা নিরামিষ দুই ধরনের খাদ্যই পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও যাত্রীদের চাহিদা ও অর্ডার অনুসারে স্পেশাল নাশতা প্রদানের সুবিধাও রয়েছে।
Leave a Reply