নৌপথ সচল ছিল বলেই কোভিড-১৯ এর সময় বাজারে পণ্যের সেই রকম দুষ্প্রাপ্যতা ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পণ্যের সরবরাহ সব সময় নিশ্চিত ছিল। তবে এটা ঠিক, কিছু-কিছু সময় দুই-একটি পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু পণ্য বাজারে নাই এই রকম ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটে নাই। কোভিডের সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌ পরিবহন একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’
শনিবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। ‘নদী, নৌপথ ও পর্যটন খাতের বিকাশে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম।
কোভিড-১৯ এর সময় আমাদের অভ্যন্তীরণ নৌ পরিবহন একদিনের জন্যও বন্ধ ছিল না দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নৌ ও সমুদ্র পথে আমাদের পণ্যের সরবরাহ সব সময় গতিশীল ছিল। চট্টগ্রাম বন্দর কোভিডের মধ্যে একদিনও বন্ধ ছিল না। বন্দরে কর্মরত অনেকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। সেখানে কোভিডের সময় বন্দরে এতো বেশি কন্টেইনার জট ছিল, সেটা এনবিআরের সঙ্গে কথা সঠিক পরিকল্পনা মাধ্যমে সমাধান করতে পেরেছি।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে নৌ পরিবহন কী পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ তা বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে তার ছয় দফার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে হতে হবে নৌবাহিনীর সদর দফতর। কয়েকদিনে আগে প্রধানমন্ত্রী সামরিক জাহাজ উদ্বোধন করেছেন। আমাদের সাবমেরিন, ফ্রিগেড আছে। আরও অনেক অত্যাধুনিক জাহাজ যুক্ত হতে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের পর্যটন খাত রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করে করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেই বঙ্গবন্ধু একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পরিণত করেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও রাজনৈতিক নেতা এটা পারেন নাই। সেই মুক্তিযুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। সেই কারণে ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখি নাই, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। সেই রকম নেতা যখন হত্যার শিকার হন, একটার পর একটা সামরিক ক্যু করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণত করা হয়, তখন সেখানে পর্যটকরা আর্কষণ বোধ করে না। সেটাই দেশে হয়েছে। বাংলা ভাইদের সৃষ্টি করে পর্যটন ব্যবস্থাকে আতঙ্কিত করে দেওয়া হয়েছিল। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
নদীপথের উন্নয়নের শেখ হাসিনার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত একনেক সভায় তিনি বলেছেন, নদী উন্নয়নে যেন বেশি বেশি প্রকল্প নেওয়া হয়। এই জন্য তিনি ডেল্টা প্ল্যান করেছেন। নদী ব্যবস্থাপনাটা যদি আমরা সঠিকভাবে না করতে পারি তাহলে দেশকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবো। বাংলাদেশ যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আছে, সেখান থেকে যে ৪১ সালে উন্নত দেশে যাবে। তারপর কী হবে? এই জন্য নদীকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।’
গাড়ির ব্যবসার জন্য একসময় নৌ ও রেলপথের উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হয়েছিল- দাবি করে আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘কিন্তু মহাসড়কগুলোর অবস্থাও খারাপ ছিল। মহাসড়ক মানে হচ্ছে কোনও সিগনাল থাকবে না। বাংলাদেশে কাগজে ছিল মহাসড়ক, বাস্তবে ছিল না। বর্তমান সরকার মহাসড়ক কী জিনিস তা দেশের মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ রেল কী জিনিস ভুলে গিয়েছিল। সেই রেলের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পণ্য নিয়ে এসেছি। এই যোগাযোগটা শেখ হাসিনার সরকার তৈরি করেছে। অন্যান্য জায়গায়ও আমাদের যোগাযোগগুলো হচ্ছে।’
Leave a Reply