জ্বালানি তেল বিপণন কোম্পানি পদ্মা অয়েল থেকে গড়ে প্রতিমাসে ৫০ কোটি টাকার জেট ফুয়েল কিনে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। লোকসানের অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটি গত ৯ বছর ধরে জেট ফুয়েলের মূল্য ক্রমাগতভাবে বকেয়া রেখে গেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিমানের কাছে পদ্মা অয়েলের পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা। বকেয়া এই টাকা পরিশোধে অবশেষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে একটি সুরাহা হয়েছে। বিমান এখন থেকে নগদ মূল্যে জ্বালানি ক্রয়ের সাথে সাথে বকেয়ার টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করবে।
বিপিসির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানের বকেয়া অনাদায়ী থাকায় ব্যাংক ঋণের সুদ গুনতে হচ্ছিল পদ্মা অয়েলকে। কারণ দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পদ্মা অয়েল বিদেশ থেকে তেল কিনে থাকে। নির্ধারিত সময়ে বিমান থেকে টাকা না পাওয়ায় তাদেরকে বড় অংকের সুদ দিতে হচ্ছিল। এই অবস্থায় চিঠির পর চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে বকেয়া পরিশোধে করণীয় নির্ধারণে চলতি বছরের ২২ অক্টোবর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক বসে। জ্বালানি, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবগণের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- এখন থেকে নিয়মিত জেট ফুয়েল ক্রয়ের বিল পরিশোধের পাশাপাশি পূর্বের বকেয়া বিলও ধীরে ধীরে পরিশোধ করবে বিমান।
বিপিসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসি বিমানের কাছে ২ হাজার ২২৪ কোটি টাকার পাওনা রয়েছে। বকেয়া আদায়ে বিমানের সঙ্গে বারবার আলোচনায় ব্যর্থ হওয়ার পর আমরা জ্বালানি বিভাগে চিঠি দিয়েছি। এই চিঠির সূত্র ধরে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানানো হয়। কিছুদিন আগে একটি বৈঠকও হয়। যেখানে নিয়মিত জেট ফুয়েল ক্রয়ের বিল পরিশোধের পাশাপাশি পূর্বের বকেয়া বিল ধীরে ধীরে পরিশোধ করবে বলে জানায় বিমান। তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে করোনার কারণে লোকসান দেখালেও তারা গত বছর লাভ করেছে বলে প্রচার করে। বিপুল পরিমাণ বকেয়া রেখে তারা এটি করতে পারে না। তবে করোনার কারণে এখন জেট ফুয়েল বিক্রির পরিমাণ কমেছে। বিমানও নগদ মূল্যে জেট ফুয়েল সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছেন পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান।
Leave a Reply