গবেষণা থেমে নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে ক্রমেই আধুনিক ও সহজতর হচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা। বাতাস ও সৌরশক্তির অনেক ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। প্রচলিত প্রয়োগের বাইরে সূর্যরশ্মিকে কাজে লাগিয়ে শুধু বাতাস থেকে বিমান চালানোর জ্বালানি উৎপাদনের সাহসী প্রচেষ্টা সত্যি বিরল।
বিশ্বে সেকেন্ডে সাড়ে ১১ হাজার লিটার এভিয়েশন ফুয়েল বা তেল ব্যবহার হচ্ছে। এক আটলান্টিক মহাসাগর পেরোতেই একটি বিমান সেকেন্ডে প্রায় এক লিটার তেল পোড়ায়। অর্থাৎ ঘণ্টায় তিন হাজার লিটার।
জ্বালানি পোড়ানোর ঝামেলায় না গিয়ে সহজ পদ্ধতির কথা ভাবতে শুরু করলেন গবেষকরা।
প্রশ্ন আসলো বিমানের জন্য যদি এমন জ্বালানি তৈরি করা যেত, তাহলে কেমন হতো? শুধু পানি, বাতাস ও সূর্যের আলোই যদি তার উপাদান হতো?
জার্মানির জুরিখ শহরের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক সেই লক্ষ্যেই গবেষণা চলছে। ছাদের ওপর এক বিশেষভাবে তৈরি সৌরচুল্লি বসানো হয়েছে, যা সূর্যের ঘনীভূত রশ্মির সাহায্যে চারপাশের বাতাস থেকে জ্বালানি সৃষ্টি করে। সেটি আডো স্টাইনফেল্ড ও তার ছাত্রছাত্রীদের সেরা সৃষ্টিকর্ম। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই টিম সেই যন্ত্র নিয়ে কাজ করছে।
সূর্য, বাতাস ও পানি থেকে জ্বালানি তৈরির তত্ত্ব যে সত্যি কার্যকর হতে পারে, এই প্ল্যান্ট তার সাক্ষাৎ প্রমাণ।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরল এ গবেষণার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাতাস শুষে নেওয়া হয় এবং তার মধ্য থেকে পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড সংগ্রহ করা হয়। তারপর আয়না বসানো ডিশে সূর্যের রশ্মি পুঞ্জীভূত করা হয়। এভাবে দুটির মধ্যে একটি রিঅ্যাক্টরকে দেড় হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উত্তপ্ত করা হয়। এ দুই চুল্লির মূলে রাখা এক ক্যাটালিটিক কনভার্টার রূপান্তরের প্রথম ধাপ সম্ভব করে।
স্পঞ্জের মতো বৈশিষ্ট্যের এ কনভার্টারের ওপর সেরক্সাইড নামের বিরল ধাতুর প্রলেপ থাকে। এর মাধ্যমে পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের উপাদানগুলো বিভক্ত করে আবার নতুন করে জোড়া দেওয়া হয়। ফলে তথাকথিত ‘সিনগ্যাস’ সৃষ্টি হয়। জুরিখের এ প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে স্পেনে আরও বড় পরীক্ষামূলক প্ল্যান্ট চালু করেছে।
Leave a Reply