পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের উদ্যোগ
প্রতিষ্ঠার চার দশক পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে জ্বালানি তেল আমদানি ও সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। চট্টগ্রামে নিজস্ব জমিতে এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বিপিসি। এ কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও চূড়ান্ত হয়েছে। ভবন নির্মাণে চলতি অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সংস্থাটি।
সূত্র জানিয়েছে, ১৯৭৬ সালে বিপিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরের বছর থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। কোম্পানিটি অপরিশোধিত এবং পরিশোধিত জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি, পরিশোধন এবং প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে। বর্তমানে বিপিসির ১৭৮ জন ও এর অধীন কোম্পানিগুলোতে প্রায় চার হাজার ২০০ কর্মী রয়েছেন।
বিপিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিজস্ব ভবন না থাকায় তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া করা ভবনে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাটির কর্মপরিধি বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া করা ভবনে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অফিস ভাড়া বাবদ বছরে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালে একবার নিজস্ব ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় বিপিসি। কিন্তু সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। পরে ২০১১ সালে ‘কনস্ট্রাকশন অব বিপিসি হেড অফিস বিল্ডিং অ্যাট চিটাগং’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিলেও তা বেশিদূর এগোয়নি। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য পরামর্শক নিয়োগ দিতে গত বছর চারটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হয়। এদের মধ্য থেকে ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড প্রথম স্থান অধিকার করে। এই প্রতিষ্ঠানটিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিতে জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন চেয়ে গত ১৮ নভেম্বর চিঠি দিয়েছে বিপিসি।
সূত্র আরও জানিয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকায় বিপিসির নিজস্ব কোনো জমি নেই। তবে চট্টগ্রামের জয় পাহাড়ে তাদের প্রায় ৩০ একর জমি রয়েছে। ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ জয়পাহাড়ে জামালখান সংলগ্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সুপারিশ করেছে। গত ১৭ নভেম্বর ভিত্তির সঙ্গে ভূমি ব্যবহারের নকশা নিয়ে বিপিসির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তেল সরবরাহকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি ভবন নির্মাণের জন্য চলতি অর্থবছরের নিজস্ব বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে।
জ্বালানি বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বিপিসি জানিয়েছে, তাদের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর কারও নিজস্ব ভবন রয়েছে, বাকিরা ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু বিপিসি এখন পর্যন্ত এমন কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্বালানি তেল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সুদৃশ্য ভবন রয়েছে। এর ফলে বৈশ্বিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর মর্যাদা অনেকাংশে বেড়েছে। বিপিসিরও নিজস্ব ভবন থাকা দরকার।
বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আবু বকর ছিদ্দীক এ বিষয়ে বলেন, কয়েক দশক পার হলেও বিপিসির নিজস্ব ভবন হয়নি। চট্টগ্রামের জয় পাহাড়ে তাদের নিজস্ব জমি রয়েছে। এখানে ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সরকার অনুমোদন করলে নিজেদের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, নিজেদের ভবন হলে সংস্থার কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
Leave a Reply