বিশ্বমানের লুব্রিক্যান্টের ব্লেন্ডার, সরবরাহকারী এবং রফতানিকারক হিসেবে ভাল অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় লুব ওয়েল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ডাকা দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, বিপিসির জুড়ে দেয়া কিছু অপ্রয়োজনীয় শর্তের কারণেই এ বাধার সৃষ্টি হয়েছে।
এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রধান পেট্রোলিয়াম বিপণন সংস্থা বিপিসি সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের কর্মসূচীর অংশ হিসাবে সরকারকে ৫,৪০০ টন লুব্রিকেটিং অয়েল সরবরাহের জন্য একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে।

তবে দেশে ১৫ এর বেশি স্থানীয় সংস্থা রয়েছে যারা তাদের ব্লেন্ডিং প্লান্টের মাধ্যমে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের লুব্রিক্যান্ট তৈরি করছে। এর মধ্যে কয়েকটি সংস্থা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের সহযোগিতায় মানসম্পন্ন লুব্রিকেটিং অয়েল তৈরি করছে। তারা অভিযোগ করেছে, বিপিসির টেন্ডার প্রক্রিয়াতে এমন কিছু অপ্রয়োজনীয় এবং কঠিন শর্তারোপ করা হয়েছে, যার ফলে তারা টেন্ডার প্রক্রিয়াতে অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল্লাহ কবির সম্প্রতি একটি সেমিনারে জানান, এ ধরনের শর্ত দেশীয় কোম্পানির জন্য সত্যিই বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি করেছে।
সূত্র জানায়, বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মবিল যমুনা লুব্রিকেন্ট নামের যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা বিশ্ব বিখ্যাত ব্র্যান্ড মবিলের সহযোগিতায় অত্যন্ত উঁচুমানের লুব অয়েল তৈরি করে থাকে। এই শর্তগুলোর কারণে তারাও এই টেন্ডারে অংশ নিতে পারছে না।
সরকারী মালিকানাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানি ও বেসরকারী সংস্থা ইসি সিকিউরিটিজের যৌথ উদ্যোগে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব (পিপিপি) হিসাবে মবিল যমুনা লুব্রিক্যান্ট বাংলাদেশ লিমিটেড (এমজেএলবিএল) নামে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমজেএলবিএল ১৯৮৮ সালে মবিল কর্পোরেশনের (বর্তমানে এক্সন মবিল কর্পোরেশন নামে পরিচিত) এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (জেওসিএল) অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই তারা বাজারে লুব্রিকেন্ট সরবরাহ করে আসছে।
সংস্থাটি অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তি এবং নেট ব্যবহার করে লুব্রিকেন্ট তৈরি করছে, যা আন্তর্জাতিক নানা সনদ প্রাপ্তির মাধ্যমে তার গুণগত মানকে প্রমাণে সক্ষম হয়েছে।
এমজেএলবিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এমএম মুকুল হোসেন ইতোমধ্যে বিপিসির চেয়ারম্যানের কাছে দেশের অগ্রণী পাবলিক-বেসরকারী অংশীদারিত্ব (পিপিপি) সংস্থার সুবিধার্থে টেন্ডারের বিধানে সংশোধনীর মাধ্যমে বাধা অপসারণের আবেদন করেছেন। তারা জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ স্মরণে আয়োজিত এই কর্মসূচীতে অবদান রাখতে চান।
লুব শিল্প সূত্র জানায়, বিপিসি দরপত্রের যোগ্যতার বিধানে একটি শর্ত রেখেছিল যে ৫,৪০০ লুব্রিক্যান্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই বিদেশী কোম্পানি হতে হবে। টেন্ডারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য শর্ত হচ্ছে সরবরাহকারীর অন্তত ১০ বছরের সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
Leave a Reply