জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) সমুদ্রগামী মিশ্র বাণিজ্যিক জাহাজের বহর গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে। এক বছরের মধ্যে কয়লা পরিবহনের জন্য ২টি ৮০ হাজার টনের মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার, ক্রুড অয়েলের জন্য ২টি এক-সোয়া লাখ টনের মাদার ট্যাংকার ও ডিজেল-জেট ফুয়েলের জন্য মাদার প্রডাক্ট অয়েল ট্যাংকার কেনার লক্ষ্যে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিএসসির বহরে ৪৪টি জাহাজ তালিকাভুক্ত হয়েছে। আশির দশকে একসঙ্গে ২৮টি জাহাজ ছিল।
বর্তমানে আছে মাত্র ৮টি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে চীনে তৈরি ৩৯ হাজার ডিডব্লিউটির নতুন ৬টি জাহাজ বিএসসির বহরে প্রাণ সঞ্চার করেছে।
এমভি বাংলার জয়যাত্রা, সমৃদ্ধি, অর্জন, এমটি অগ্রযাত্রা, অগ্রদূত ও অগ্রগতি নামের আধুনিক জাহাজগুলো বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে পণ্য ও লাল-সবুজের বাংলাদেশের সুনাম ফেরি করছে।
বাকি দুইটি অয়েল ট্যাংকার ১৪ হাজার ৫৪১ ডিডব্লিউটির বাংলার জ্যোতি ও সৌরভ ১৯৮৭ সালে ডেনমার্কে তৈরি হয়েছিল।
এগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে পতেঙ্গা রিভারমুরিং জেটিতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জ্বালানি তেল লাইটারিং করছে। পুরনো জাহাজ মেরামত, ডকিং চার্জ, বেশি জ্বালানি ব্যবহার ইত্যাদির কারণে এ দুইটি জাহাজ ইস্টার্ন রিফাইনারির জন্য বাস্তবায়নাধীন সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন প্রকল্প অপারেশনে না যাওয়া পর্যন্ত সচল রাখতে চায় বিএসসি কর্তৃপক্ষ।
বিএসসির পরিচালক (প্রযুক্তি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারের প্রচেষ্টায় বিএসসি অত্যন্ত সফলভাবে নতুন ৬টি সমুদ্রগামী জাহাজ বহরে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আরও ৬টি বড় জাহাজ সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করছে। এর বাইরে বিএসসির মিশ্র বাণিজ্যিক জাহাজের বহর গড়ার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে আরও অনেক জাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, অগ্রাধিকার ৬টি জাহাজের মধ্যে রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লা পরিবহনের জন্য ৮০ হাজার টনের ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার কিনবে বিএসসি। ইস্টার্ন রিফাইনারির ক্ষমতা আগামীতে দ্বিগুণ হবে। সব ক্রুড অয়েল বিএসসির নিজস্ব জাহাজে পরিবহনের লক্ষ্যে ১ লাখ ও ১ লাখ ২৫ হাজার টনের দুইটি মাদার ট্যাংকার কেনার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিপিসি বছরে ৩০ লাখ টন ডিজেল ও সাড়ে ৩ লাখ টন জেট ফুয়েল আমদানি করে, যা বিদেশি জাহাজে আনা হয়। এসপিএম প্রকল্প অপারেশনে গেলে লাইটারিংয়ের প্রয়োজন হবে না। তাই ডিজেল ও জেট ফুয়েল বিদেশ থেকে দেশে আনার জন্য ৮০ হাজার টনের ২টি মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার কিনতে চায় বিএসসি। এসব জাহাজ বহরে যুক্ত হলে কয়লা ও জ্বালানি তেল আমদানির পরিবহন খাতে বৈদেশিক মুদ্রা যেমন সাশ্রয় হবে তেমনি নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেন নিশ্চিত হবে।
Leave a Reply