রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিক্যাল) মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন যুগ্ম মহাপরিচালক (অপারেশন) মুরাদ হোসেন ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন। আগস্টে এ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এর পর ডিপিপি তৈরি করে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠায় রেলওয়ে। প্রস্তাবনায় ৫৪টি কোচের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি কোচ আমদানিতে খরচ পড়বে ছয় কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের ৭৮ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। অবশিষ্ট ২৭৮ কোটি টাকা ধরা হয়েছে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে। ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতেও প্রকল্প রাখা হয়েছে। রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশকে মাথায় রেখে ট্যুরিস্ট ট্রেন চালুর জন্য রেলওয়ের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ইতোমধ্যেই রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে এটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে। সব কিছু ঠিক থাকলে কক্সবাজার রেললাইন চালুর আগেই ট্যুরিস্ট ট্রেন চালানোর সব আয়োজন সম্পন্ন হয়ে যাবে। ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথে সাধারণ ট্রেনের পাশাপাশি প্রতিদিন ঢাকা থেকে দুই জোড়া ট্যুরিস্ট ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে চালানো হবে এক জোড়া ট্রেন। সবক’টি কোচ হবে আলিশান ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। পর্যটক যাত্রীদের সুবিধার্থে এসব কোচে সুপরিসর বাথ সার্ভিস ছাড়াও থাকবে রেলের নিজস্ব ক্যাটারিং সার্ভিস, সার্বক্ষণিক গার্ড ও ওয়েটার সুবিধা। যাত্রাপথে স্বচ্ছ আয়নায় বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের ব্যবস্থাও থাকবে।
যেসব কোচ আমদানি করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে ছয়টি মিটারগেজ ট্যুরিস্ট কার (সিটি), ১৩টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপার কার (ডব্লিউজেসি), ২২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার (ডব্লিউইজেসিসি), সাতটি পাওয়ার কার (ডব্লিউপিসি), শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডাইনিং কার ও গার্ড ব্রেক (ডব্লিউজেডিআর)।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে। প্রকল্পের আওতায় ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার ও রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় আবার রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথও নির্মাণ করা হবে। চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) এবং বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বিভিন্ন লটে বিভক্ত এসব কাজ করছে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষে রেললাইনটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা।
Leave a Reply