চট্টগ্রাম ও সাভারের পর এটি হবে দেশে বার্জারের তৃতীয় কারখানা। এ কারখানা করতে প্রায় আড়ইশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বহুজাতিক কোম্পানিটি। এখানে বিশেষায়িত রং উৎপাদন করা হবে। বিশেষ করে পানি ও দ্রাবকভিত্তিক, ইমালশন ও রেজিনস রং তৈরি করা হবে। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কারখানার নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা।
বার্জার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় নানা ধরনের পণ্য ও অবকাঠামো নির্মাণ বাড়ছে। এতে ধরন ভেদে রঙের চাহিদাও বাড়ছে। এ কারণে রং উৎপাদন কার্যক্রম সম্প্রসারণে যাচ্ছেন তারা। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের নতুন এ কারখানায় রঙের পাশাপাশি ভবিষ্যতে অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের সুযোগও রাখা হবে। তিনি আরও জানান, এ ছাড়া নতুন কোনো অংশীদারের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ করা হলেও তা বার্জারের নতুন এ পার্কে করা হবে। এমন পরিকল্পনা থেকে বেজার কাছ থেকে ৩০ একর জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে।
বার্জার পেইন্টের কর্মকর্তারা জানান, নতুন কারখানা চালু হলে তিনশ থেকে চারশ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এটির বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণসহ সার্বিক উৎপাদন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয় সেজন্য পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ জন্য ‘পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজনীয় স্থাপনা গড়ে তোলার সুযোগও থাকবে।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে কারখানা করতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি করে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় রং নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির রং উৎপাদনের অভিজ্ঞতা প্রায় ২৫০ বছরের। বাংলাদেশে তারা চট্টগ্রামের কালুরঘাটে প্রথম কারখানা স্থাপন করে স্বাধীনতার এক বছর আগে থেকে ১৯৭০ সালে। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ নামে কোম্পানি গঠন করা হয় ১৯৮০ সালে। ১৯৯৯ সালে সাভারে দ্বিতীয় কারখানা স্থাপন করে। এ দুই কারখানায় রঙের পাশাপাশি আঠা ও নির্মাণ খাতের রাসায়নিক উৎপাদন হচ্ছে। সম্প্রতি করোনাপ্রতিরোধী স্যানিটাইজার উৎপাদন ও সেবা দিচ্ছে অন্যতম রঙের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডটি।
বেজা চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনীর সোনাগাজীতে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে পূর্ণাঙ্গ শিল্পনগর গড়ে তুলছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে দেশের বৃহত্তম এ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) স্থাপনের কাজ পুরোদমে চলছে। একই সঙ্গে প্লট বা জমি বরাদ্দ পাওয়া বিভিন্ন কোম্পানি কারখানা স্থাপনের কাজও শুরু করেছে। বার্জারের মতো আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শুরু করেছে। চলতি বছরে কিছু কারখানায় উৎপাদনও শুরু হবে বলে আশা করছে বেজা।
Leave a Reply