হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার কার্গোতে করে পোশাক রপ্তানী করার ক্ষেত্রে বড় ধরণের বাধার সামনে পড়লেন তৈরীকৃত পোশাক রপ্তানীকারকরা। এয়ার কার্গোর রেট দ্বিগুন হওয়ায় তাদের খরচ বেড়েছে অনেক। এর ফলে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পোশাক রপ্তানীকারকরা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক পোশাকের মূল্য হ্রাস হয়েছে। এবার এয়ার কার্গোর রেট বাড়ায় বিপাকেই পড়লেন গার্মেন্টস সেকটরের মালিকরা।
বিমান সংস্থাগুলি বলছে যে তারা কার্গো রেট বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, গত তিন মাসে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফ্লাইট বন্ধ থাকায় চাপ সামাল দিতে পারছে না হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর। তাছাড়া গত বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো যে ক্ষতির মুখে পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে বর্তমানে কার্গো এবং যাত্রীবাহী বিমানের রেট বাড়িয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোনও বিমানবন্দরে ট্রাকিং সুবিধা ছাড়াই প্রতি কেজি ৩.২০ থেকে ৩.৩০ ডলার চার্জ করা হচ্ছে। ট্রাকিং সুবিধাসহ প্রতি কেজি চার্জ করা হচ্ছে ৩.৫৫ থেকে ৩.৬৫ ডলার পর্যন্ত। অথচ গত মার্চে এই রেট ছিল ১.৭০ থেকে ১.৮০ ডলার। জাতীয় রপ্তানীর ৬০ শতাংশেরও বেশি এবং পোশাক রপ্তানীর ৬৪ শতাংশ ইউরোপীয়ান মার্কেটে হয়ে থাকে। আমেরিকার ক্ষেত্রেও এই মূল্য বেড়েছে অনেক। যেখানে গত মার্চে প্রতি কেজিতে খরচ হতো ২.৮০ থেকে ২.৮৫ ডলার সেখানে বর্তমানে খরচ পড়ছে ৫.৯০ থেকে ৬.২০ ডলার। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে প্রতি দিন ৪০০ টন পণ্য এয়া কার্গোতে করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে। গত মার্চের আগে এর পরিমাণ ছিল ৯০০ টন।
প্রায় ৪০ টি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন পণ্য বহন করত। তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই মালামাল বহন স্থগিত করেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে পোশাক পণ্যের বিমান চালান ৩৩.৬৮ শতাংশ কমে ১৩৪,৮০৬ টনে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালে এর পরিমাণ ছিল ২০৩,২৫৬ টন।
“এক মাস আগে, আমি এমনকি আমার এক ইউরোপীয় ক্রেতাকে কাজের আদেশ বাতিল করতে বলেছিলাম, যখন তিনি আমাকে বিমানের মাধ্যমে পণ্যগুলি পাঠাতে বলেন, এটি আমার উৎপাদন ব্যয় এবং লাভের চেয়ে ব্যয়বহুল,” কপ্পা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ এফ রহমান বলেছিলেন ।
এয়ারলাইনসের একজন এক্সিকিউটিভ জানিয়েছেন, কোভিড -১৯ এর ভ্যাকসিন পরিবহন শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিমান চালানের চার্জ আরও বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, “বিমানবাহী চালানের ব্যবসা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। মহামারীকালীন সময়ের আগের তুলনায় বিমান ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”
আহমেদ বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর পর বিমান চলাচল শুরু হলে প্রতি কেজি পণ্য পরিবহনে কভিড-১৯ পূর্ব সময়ের তুলনায় ১০০ শতাংশ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত রেট বেড়েছে।
Leave a Reply