৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের নিশ্চয়তা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পর অবরোধ তুলে নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ১০ ঘণ্টা পর বুধবার বিকেল সোয়া ৫টায় বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শিক্ষার্থীরা এসময় জানান, এই আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে তারা কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গতকাল মঙ্গলবার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে ববি’র শিক্ষার্থী সজল ও মেমিকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে এবং শ্রমিক রফিককে গ্রেফতারের দাবি জানায়। পুলিশ রফিককে ১ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে এর জের ধরে মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর রূপাতলী এলাকায় ফের শিক্ষার্থীদের মেসে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। এসময় তাদের ওপরেও হামলা করা হয়। ওই হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে ১১ জনকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টায় শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক থেকে অবরোধ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এ আন্দোলন চলার সময় মেসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছিল তারা। এ সময় দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ আন্দোলন চলাকালেই সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে থাকা বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে চলাচলকারী কুয়াকাটা এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা এ ঘটনায় জড়িত নয়। এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই বাসটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন জানিয়েছেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মেসে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়। বিষয়টি আন্দোলনরতদের অবহিত করলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার শিপন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। তারাও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন। একইসঙ্গে আগুনে বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোক্তার হোসেন বলেন, দ্রুততার সঙ্গে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপর মহাসড়ক থেকে সরে আসে আন্দোলনকারীরা।
Leave a Reply