বিদ্যুৎচালিত বা ইলেকট্রিক যানবাহন আমদানিতে থাকা ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ও উঠিয়ে দেওয়ার দাবি বারভিডা’র
রিকন্ডিশন্ড গাড়ির সংজ্ঞা পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। এ দাবি করেছে এ ধরনের গাড়ির আমদানিকারক ও ডিলারদের সংগঠন বারভিডা। সংগঠনটি বলেছে, জাপান থেকেই সর্বাধিক সংখ্যক ব্যবহূত, পুরোনো বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করা হয়। সে দেশে রিকন্ডিশন্ড হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য দিন ও কিলোমিটারের হিসাব করা হয় না। প্রথম রেজিস্ট্রেশন বাতিল হলেই তা রিকন্ডিশন্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। অথচ বাংলাদেশে শর্ত দেওয়া হয়েছে, প্রথম রেজিস্ট্রেশন ও রেজিস্ট্রেশন বাতিলের তারিখের মধ্যকার সময়সীমা নূ্যনতম ৩৬৫ দিন এবং ১০০০ কিলোমিটার চালিত হতে হবে। সময়সীমার কারণে ৩৬৫ দিনের কোনো অবচয় সুবিধা নেই। ফলে ২ বছর ব্যবহার করা এবং আমদানি করা গাড়ি পুরোনো হিসেবে বিবেচিত হলেও নতুন গাড়ির সমান শুল্ক্ক-কর দিতে হয়। বারভিডা চায়, উৎপাদনকারী দেশের নিয়ম অনুসরণ করা হোক।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক্-বাজেট আলোচনা সভায় শুল্ক্ক ও অন্যান্য কর বিষয়ে সংজ্ঞা পরিবর্তনসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দেয় বারভিডা। অবচয় হার পুনর্নির্ধারণ এবং সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক্কের হার পুনর্বিন্যাস চেয়েছে সংগঠনটি। সভায় প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হক। এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) আলমগীর হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বারভিডার অন্যান্য নেতা ও এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বারভিডা জানায়, ১০ থেকে ১৫ আসনের ব্যবহূত, পুরোনা বা রিকন্ডিশন্ড মাইক্রোবাস আমদানিতে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে সম্পূরক শুল্ক্ক রয়েছে ৩০ শতাংশ। বারভিডা মনে করে, অতিরিক্ত শুল্ক্কের চাপে ব্যাপক ব্যবহারযোগ্য ও জনপ্রিয় এ বাহনের আমদানি কমেছে। আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেটে এ সম্পূরক শুল্ক্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংগঠনটি বলেছে, প্রত্যাহার হলে আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
বিদ্যুৎচালিত বা ইলেকট্রিক যানবাহন আমদানিতে থাকা ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্কও উঠিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে বারভিডা। আব্দুল হক বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ মোটরযানে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে আসার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রিক গাড়ির গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা বাড়তে পারে। একটি নীতিমালার আওতায় এ ধরনের গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ দরকার। সম্পূরক শুল্ক্ক প্রত্যাহারে এর আমদানি বাড়বে।
বারভিডা আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ৪০ বা তার বেশি আসনের রিকন্ডিশন্ড বাসের আমদানি শুল্ক্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহায়তা করার জন্য পিকআপ, ডাম্প ট্রাক ও অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহূত যানবাহনের আমদানি শুল্ক্ক ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে। ফসিল ফুয়েল গাড়ির সম্পূরক শুল্ক্কও কমানোর প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।
আব্দুল হক অবচয় সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বয়স গণনা পদ্ধতি সংশোধনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে গাড়ির বয়স গণনার বেলায় চেসিস বুকে উল্লেখ করা তৈরি সালের পরের বছরের প্রথম দিন থেকে জাহাজীকরণের দিন পর্যন্ত সময়কে গণনা করা হয়। তারা মনে করেন, এ পদ্ধতি সংকোচনমূলক ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। তাদের দাবি, চেসিস বুকে লিপিবদ্ধ তৈরি সালের পরের বছরের প্রথম দিন থেকে বয়স গণনা শুরু হোক।
Leave a Reply