কুষ্টিয়ার লাহিনী-লাঙ্গলবন্দ সড়কের ১৫ কিলোমিটার এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে। ২০ মিনিটের এ সড়ক অতিক্রম করতে সময় লাগছে দেড় ঘণ্টা। জেলার কুমারখালী উপজেলার লাহিনী থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত সড়কে কাজ হয় না প্রায় এক যুগ। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় সড়কের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কার্পেটিং আর ইট-খোয়া উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
এমন সড়কেই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে অসংখ্য যানবাহন। ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্য সড়কগুলোর চেয়ে লাহিনী-লাঙ্গলবন্দ সড়কে কম সময়ে পাশের জেলা মাগুরা যাতায়াত করা যায় বলে অনেকেই এই সড়ক ব্যবহার করেন। এ ছাড়া কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা, চাপড়া, চাঁদপুর, পান্টি ও বাগুলাট ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের জেলা সদর ও রাজধানীতে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। আবার ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলাবাসী নিত্যপ্রয়োজনে এই সড়ক ব্যবহার করেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে এই সড়কের সংস্কার না হওয়ায় লাহিনী থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সড়কের এই অংশে কার্পেটিং আর ইট-খোয়া উঠে গেছে। কোথাও কোথাও পাকা সড়কের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ায় মুশকিল। পুরো সড়ক জুড়ে খানা-খন্দে ভড়া। এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিকল হচ্ছে যানবাহন। বর্ষাকালে সড়কের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে যায়। তখন সড়কটি চলাচলের ক্ষেত্রে ভয়ংকর হয়ে পড়ে। এদিকে, বর্তমান শুষ্ক মৌসুমে সড়কের দুই পাশের বাসিন্দাদের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে সড়কটি। এ ছাড়া সড়কের ধুলো আর ইটের সুরকি বাতাসে উড়ে বাড়ি ঘরে গিয়ে পড়ছে।
এতে ঘরের আসবাবপত্র আর কাপড় চোপড় নোংরা হয়ে যায়। জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে এই সড়কের দরপত্রে অংশ নিয়ে কাজ পান স্থানীয় এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজ পাওয়ার পরপরই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক একটি মামলায় গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। এ কারণে সড়কের সংস্কার কাজ আজ পর্যন্ত শুরু হয়নি। ফলে দিনদিন সড়কটির অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়ছে। এই সড়কে যাত্রী আনা নেওয়া করেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জানবার আলী। তিনি বলেন, অনেক দিন থেকেই সড়কের অবস্থা খারাপ। তবে ৪/৫ বছর হলো সড়কটি খারাপ হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এই সড়কে। অসুস্থ স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে করে জেলা সদরের হাসপাতালে নিচ্ছেন যদুবয়রা গ্রামের আবদুল জলিল। তিনি বলেন, এই সড়কে যে অবস্থা তাতে গাড়ি পাওয়া মুশকিল। কুষ্টিয়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান মন্ডল জানান, ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারে গত বছর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। এতে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছিল তার কর্ণধার ব্যক্তিগত কারণে কাজটি করতে পারেননি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগরিই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস দেন ওই প্রকৌশলী।
Leave a Reply