বগুড়ার শেরপুর ও আদমদীঘিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শেরপুরে যাত্রীবাহী দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। আর আদমদীঘিতে ভটভটির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। দুই বাসের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন যাত্রী আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ২ টার দিকে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের দশমাইল নামক স্থানে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনায় হতাহতদের তাৎক্ষণিক নাম পরিচয় জানা যায়নি।
শেরপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা রতন হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঢাকাগামী একটি বাস মহাসড়কের ওই স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন যাত্রী নিহত হন। আর দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দশ থেকে বারোজন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে দ্রুত বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে দুইজন হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান বলে জানান এই স্টেশন কর্মকর্তা।
এদিকে দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি মহাসড়কের মধ্যে আঁড়াআঁড়িভাবে পড়ে থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তখন মহাসড়ের উভয়পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের দশমাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ বানিউল আলম আনাম বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহতদের নাম-পরিচয় জানান চেষ্টা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর যান চলাচল বন্ধ থাকলেও কিছু সময় পরেই তাদের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বাস দুটি জব্দ করা হয়েছে।
তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে ভটভটির ধাক্কায় আব্দুল মোমিন (৩২) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ৭টায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার দমদমা বেইলী ব্রিজ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছোটআখিড়া গ্রামের মোজার ছেলে আব্দুল মোমিন একই উপজেলার কদমা গ্রামের তার শ্বশুরবাড়ি থেকে শনিবার সকালে মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে দমদমা বেইলী ব্রিজ এলাকায় সান্তাহার মৎস্য আড়ত থেকে ফেরার পথে বিপরিত দিক থেকে আসা ভটভটির ধাক্কায় আব্দুল মোমিন গুরুত্বর আহত হয়। গুরুত্বতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নওগাঁ হাসপাতালে নেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনায় ভটভটি চালক উপজেলার কদমা গ্রামের ছবের উদ্দিনের ছেলে জিল্লুর রহমান ও ভটভটি যাত্রী করজবাড়ি গ্রামের সয়েব উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন গুরুত্বর আহত হন।
মোটরসাইকেল থেকে পড়ে বগুড়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু : বগুড়ায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আবুল কালাম আজাদ (৭০)। তিনি জেলার কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামগ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
কাহালু থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার বিবিরপুকুরে কাজ শেষে কাহালু আসার পথে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। এসময় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। মাথায় আঘাত পাওয়ায় তাকে পরিবারের লোকজন দ্রুত বগুড়ার শহরের সাইক জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমবার হোসেন জানান, আবুল কালাম আজাদ মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে বিবিরপুকুর পড়ে মাথায় আঘাত পান। পরে তাকে পরিবারের লোকজন শহরের সাইক জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে রাতে তার মৃত্যু হয়।
Leave a Reply