নগরবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন একটি আর্ন্তজাতিক মানের সুইমিং পুল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আউটার স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনাধীন সুইমিং কমপ্লেক্স চালু হলেও নানাবিধ কারণে অদ্যাবধি সেই পুলটি নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এর মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনে অবকাঠামোগত সংকটে ভুগতে থাকা চট্টগ্রাম পাচ্ছে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত আরেকটি আর্ন্তজাতিক মানের সুইমিং কমপ্লেক্স। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বন্দর স্টেডিয়ামের পাশে নির্মিত হচ্ছে এই কমপ্লেক্সটি। যার নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসেই উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে কাক্সিক্ষত স্বপ্নের এই সুইমিং কমপ্লেক্স। বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, সুইমিং কমপ্লেক্সের ৯৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
আগামী মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, এরমধ্যে আন্তর্জাতিক মানের এ সুইমিং পুল পরিচালনার জন্য নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। পুলের ওয়াটার পিউরিফাইরিং সিস্টেমসহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। আধুনিক সব সুইমিং পুল যেভাবে পরিচালনা করা হয়, সেটা অনুসরণ করেই বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া সুইমিং পুলটি কিভাবে এবং কারা ব্যবহার করতে পারবেন তার জন্যও একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এরপর ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হবে এটি।
প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সোয়া একর জায়গার উপর গড়ে উঠা এ কমপ্লেক্সে আছে আলাদা দুটি সুইমিং পুল। আর্ন্তজাতিক মানের তৈরি ১২৫০ বর্গমিটার (দৈর্ঘ্যে ৫০ মিটার ও প্রস্তে ২৫ মিটার) আয়তনের প্রধান পুলে রয়েছে ৮টি লেন। যার একপাশের গভীরতা সাড়ে চার ফুট এবং অপরপ্রান্তের গভীরতা সাড়ে তের ফুট। যাতে একসাথে ৮ জন সাঁতারু লো ডাইভিং দিতে পারবেন। এছাড়া কমপ্লেক্সের প্রধান পুলের পাশে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য লম্বা ও ২০ ফুট প্রস্তের আরো একটি ক্ষুদে সুইমিং পুল। যাতে ক্ষুদে ও শিক্ষানবীশরা সাঁতার শিখতে পারবেন। যার একদিকের গভীরতা দুই ফুট ও অপরপ্রান্তে ৪ ফুট।
সুইমিং পুলের একপাশে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গ্যালারি। যাতে একসাথে চার’শ লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। কমপ্লেক্সে যুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সনা বাথ ও জ্যাকুজি সিস্টেম। এছাড়া পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের জন্য আলাদা আলাদভাবে ড্রেসিংরুম, শাওয়ার জোন ও টয়লেটের ব্যবস্থা। সুইমিং কমপ্লেক্সটি চালু হলে পেশাদার সাঁতারুরা যেমন প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন করতে পারবেন, তেমনি দক্ষ ট্রেনারের মাধ্যমে সাঁতারও শিখতে পারবেন নতুনরা। সবকিছু ঠিক থাকলে অতি শীঘ্রই বন্দরের এ সুইমিং পুলের নীল জলে ঢেউ তুলতে পারবেন সাঁতারুরা। পুলটি উদ্বোধন হলে পূর্ণাঙ্গ স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ার পথে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে নির্মিতব্য সুইমিং কমপ্লেক্সের প্রবেশপথের পাশে আরো তৈরি করা হচ্ছে একটি বাস্কেটবল ও টেনিস কোর্ট।
Leave a Reply