মোংলা বন্দরে ৯৭০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের আগমনের মধ্য দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরেই সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। এই অর্থবছরে আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। গতকাল রবিবার মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে ৩৬০ কোটি টাকা আয়, জাহাজ আগমন এক হাজারেরও বেশি ও নিট মুনাফা ১৫০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই বন্দরে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এসেছে ১৪ হাজার ৪৪৭টি।’
এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন এম আবদুল ওয়াদুদ তরফদার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. শাহিনুর আলম, হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন, প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান, পরিকল্পনা প্রধান মো. জহিরুল হক, পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল, প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল ও হাইড্রোলিক) মো. শওকত আলী, উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান মিনা ও বন্দর চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. নিয়ামুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা আরো বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৮ অর্থবছর পর্যন্ত এই বন্দর নানামুখী প্রতিকূলতার কারণে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। ২০০৭-০৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতটি জাহাজ ও পূর্ণ অর্থবছরে মোট ৯৫টি জাহাজ আসে। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বন্দর ১১ কোটি টাকা লোকসান করে। ফলে এই বন্দর লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দেয়। শুরু হয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ। তাই ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হয়ে ওঠায় প্রতিবছর বিদেশি জাহাজের আগমনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।’
পদ্মা সেতু, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, রেললাইন ও পশুর চ্যানেলের ইনার বারের খননসহ চলমান বন্দরের মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন হলে এই বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যতা আরো বেড়ে যাওয়ার আশা রেখে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আউটার বারের খননকাজ সম্পন্ন হয়েছে, ফলে বড় বড় জাহাজ সরাসরি চ্যানেলে অবস্থান ও জেটিতে ভিড়তে পারছে। এই বন্দর ব্যবহারে দিনকে দিন আগ্রহী হচ্ছেন দেশি-বিদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকরা।’
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ দ্য সিটি অব লায়ন্স সর্বপ্রথম সুন্দরবনের পশুর নদীর জয়মনিরগোল এলাকায় নোঙর করে। এটাই ছিল মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার সূচনা।
Leave a Reply