ঢাকার মেট্রো রেলপথে যেসব ট্রেন চলবে, সেগুলো দাঁড়াবে স্টেশনের প্লাটফর্মের সমতলে। এ কারণেই মেট্রো ট্রেনে উঠতে কোনো সিঁড়ি লাগবে না। এমনটি জানিয়েছেন মেট্রোরেল প্রকল্পের অধীনে প্রথম ট্রেনচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম।
সম্প্রতি তিনি বলেন, মেট্টোরেলের কোচগুলো হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি কোচের দুপাশে থাকবে চারটি করে দরজা। ট্রেন থামবে ১৭টি স্টেশনে। স্টেশনে ট্রেন আসার পর একপাশ খুলে যাবে। ট্রেনটি দাঁড়াবে রেলস্টেশনের প্লাটফর্মের সমতলে। এ কারণে মেট্রো ট্রেনে উঠতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালনাধীন ট্রেনের মতো সিঁড়ির প্রয়োজন হবে না।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মেট্রোরেলের দুটি ট্রেন সেট এসেছে ঢাকায়। এগুলোর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরুর আগে কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কয়েকজন সহকর্মী এসব কাজে সম্পৃক্ত আছেন। আমি নিজেও ট্রেনে উঠেছি।
প্রকল্পের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, রেলস্টেশনের প্রতিটিতে তিনটি করে তলা (ফ্লোর) থাকবে। দ্বিতীয় তলায় থাকবে নারী ও পুরুষ যাত্রীদের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টার। দ্বিতীয় তলার কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীরা ট্রেনে ওঠার জন্য তৃতীয় তলায় যাবেন। সেখানে থাকবে যাত্রীদের অপেক্ষার ঘর। থাকবে বসার জন্য চেয়ার। স্টেশনে ট্রেন আসবে নির্দিষ্ট সময় পর পর।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রো রেলপথে পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে জাপান থেকে দুটি ট্রেন সেট ঢাকায় আনা হয়েছে। আরও দুটি সেট আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামে এসব ট্রেন সেট তৈরি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করা হবে সেখানে। এরইমধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরি হয়েছে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, গত ২২ জুন জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে দুটি ট্রেন সেট নিয়ে একটি জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। জাহাজটি গত ২০ জুলাই মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছে। তারপর গত ২২ জুলাই সেট দুটি মোংলা বন্দরে চারটি বার্জে নামানো হয়। শুল্ক ও ভ্যাট সম্পর্কিত প্রক্রিয়া শেষ করে বার্জযোগে মেট্রো ট্রেন সেটগুলো আগামী মাসের (আগস্টের) তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় উত্তরার ডিএমটিসিএল ডিপোতে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এগিয়ে যাচ্ছে মেট্রো রেলপথের নির্মাণকাজ
ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন এন ছিদ্দিক বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এমআরটি লাইন-৬ বা দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। ঢাকায় আনা দুটি মেট্রো ট্রেনের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা ডিপোর ভেতরে চলছে।
উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে এ মেট্রো রেলপথ। খুঁটির ওপর বসানো রেলপথ মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ। মতিঝিল থেকে রেলপথ বর্ধিত করা হবে কমলাপুর পর্যন্ত। সব মিলিয়ে রেলপথটি হবে সাড়ে ২১ কিলোমিটার। এ রেলপথে থাকবে ১৭টি স্টেশন। এ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশে কাজ এগিয়েছে ৮৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। উৎস: ঢাকা পোস্ট।
Leave a Reply