1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হলেন স্টার লাইনের হাজী আলাউদ্দিন তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নামুক আবার পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রী পরিবহন তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বিশ্বখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড রয়েল এনফিল্ড খুব শিগগিরই বাজারে আসছে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী এমটি কনসার্টো জাহাজে বাংলাদেশী নাবিকের মৃত্যুর তদন্ত দাবি

বেপরোয়া ড্রাইভিং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

সুদীপ্ত সাইফুল
  • আপডেট : সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১

দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিকারহীনভাবেই চলছে এই দুর্ঘটনা নামক ‘হত্যাযজ্ঞ’। গত শনিবার আরেকটি বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে গেল ময়মনসিংহের ত্রিশালে। দুই বাসের গতির প্রতিযোগিতায় ঝরে গেল সাতটি প্রাণ। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ ধরনের মর্মান্তিক খবর আমাদের পেতে হয়। এসব ঘটনা স্বজনহারাদের জীবনকে কতটা দুর্বিষহ ও বেদনাবিধুর করে তুলছে, তার খোঁজ কে রাখে! বলা হয়- একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। কেননা, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় অনেক পরিবার একেবারেই ধ্বংস হয়ে যায়।
সড়ক-মহাসড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫-১৬ জন মানুষের মৃত্যু ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনায়। সাধারণত ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অদক্ষ ও মদ্যপ চালক, বেপরোয়া গতি, অপ্রশস্ত সড়ক, ওভারটেকিং এবং ওভারলোডিংয়ের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে। কারণ তুলনামূলক মহাসড়কের অবস্থা ভালো থাকায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায় চালকরা। অনেক সড়ক-মহাসড়কে স্থায়ী সড়ক বিভাজক না থাকায় ওভারটেক করতে গিয়ে চালকরা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে অনেক সময় খাদে পড়ে যাওয়া কিংবা মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি দুর্ঘটনাস্থলের কিছু দূর থেকে আরেকটি বাসকে ওভারটেক করার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করে। গতি বাড়িয়ে বাসটি দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাককে প্রবল বেগে ধাক্কা দেয়। এতেই ঘটে হতাহতের ঘটনা।
সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অনেকেই চালকের অদক্ষতা, অবহেলা কিংবা স্বেচ্চাচারিতাকে বেশি দায়ী করে থাকেন। বুয়েটের গবেষণা অনুযায়ী, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। অনেক চালক বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স বহন করে না। ট্রাফিক আইন মানার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যথেষ্ট অনীহা লক্ষ্য করা যায়। অকারণে সড়কে তারা গতির প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে যাত্রী, পথচারী এবং নিজ প্রাণকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মদ্যপ অবস্থায় চালক গাড়ি চালাতে শুরু করে। টানা কয়েক দিন গাড়ি চালায় কোনো বিশ্রাম ছাড়াই। আবার চালকের আসনে বসে তার সহকারী, যা দুর্ঘটনাকে অনিবার্য করে তোলে।
আমাদের দেশে ভারী যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রদানের বিষয়কে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক, সমন্বিত, সুসংগঠিত করা দরকার। কারণ তারা দক্ষ না হলে, তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের অভাব থাকলে তারা এ গতির খেলায় মেতে উঠবেই। একই সঙ্গে তাদের শারীরিক বা মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার আগে ব্যক্তি মাদকাসক্ত কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার। চালকরা একটানা কত ঘণ্টা যানবাহন চালাতে পারবে, তা নির্ধারণ এবং বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি। অনেক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্লান্ত চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল মহাসড়কে বাসের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কে চালকদের উচ্চগতি, মধ্যরেখা অতিক্রম, ওভারটেকিং নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে উচ্চহারে জরিমানা এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ডের বিধান রাখা যেতে পারে। এর বাস্তবায়ন করা গেলে চালকরা সতর্কভাবে গাড়ি চালাতে বাধ্য হবে। পাশাপাশি মহাসড়কগুলো চার লেনে উন্নীত করে স্থায়ী সড়ক বিভাজক তৈরি করা দরকার। সড়কে প্রতিনিয়ত যে প্রাণ ঝরছে, এর রাশ টানতেই হবে। কেউ যাতে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখিয়ে যানবাহন চালানোর সুযোগ না পায়; ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন যেন সড়কে চলাচল করতে না পারে, সে জন্য সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রীসাধারণসহ সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা দরকার। আমাদের অগ্রগতির পথে সড়ক দুর্ঘটনাকে সঙ্গী করতে পারি না। আমাদেরকে এই মৃত্যুফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। লেখক : সাংবাদিক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT