শিগগিরই মহাকাশে ছুটতে চলেছে বোয়িংয়ের মহাকাশযান। এত দিন পৃথিবীর আকাশে ভরশূন্য অবস্থায় ছোটার সুযোগ পায়নি বোয়িংয়ের কোনো বিমান। সব সময়ই তাকে বাঁধা পড়ে থাকতে হয়েছে পৃথিবীর জোরালো মাধ্যাকর্ষণ বলের ‘মায়া’য়। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের গোড়ার দিকেই বোয়িংয়ের মহাকাশযান প্রথমবার মহাকাশ স্টেশনে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) একটি সূত্র জানিয়েছে, বোয়িং কম্পানির বানানো মহাকাশযানের নাম দেওয়া হয়েছে স্টারলাইনার। ওই স্টারলাইনারে চাপিয়েই এবার বিভিন্ন দফায় নাসা মহাকাশচারী পাঠাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। নাসা সূত্রের খবর, বোয়িং এত দিন মূলত যাত্রী ও মালবাহী বিমান তৈরি করা এবং সেগুলো চালালেও গত শতাব্দীর শেষের দিক থেকেই সংস্থা জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে। তৈরি করতে শুরু করে দেশটির নৌ ও বিমানবাহিনীর জন্য বিমান। এমনকি যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্রও। পরে ৯-এর দশকের শেষের দিক থেকে বোয়িং বানাতে শুরু করে রকেট এবং রকেট ও মহাকাশযানের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশও। ৯-এর দশকের একেবারে শেষ ভাগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন চালু হওয়ার পর থেকেই সেখানে বিভিন্ন গবেষণা ও স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নাসা তার মহাকাশচারীদের পাঠাত নিজেদের বানানো মহাকাশযানে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে সেই প্রকল্প বন্ধ করে দেয় নাসা। এরপর গত ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিজেদের মহাকাশচারী পাঠানোর জন্য নাসা মুখাপেক্ষী হয়ে থেকেছে, এখনো থাকে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা রসকসমসের বানানো মহাকাশযানের। তবে ২০১৪ সালেই নাসা সিদ্ধান্ত নেয়, এই পরনির্ভরতার পথ থেকে তারা বেরিয়ে আসবে। তখনই ঠিক হয়, এবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিজেদের মহাকাশচারী ও রসদ পাঠানোর জন্য বোয়িংয়ের বানানো মহাকাশযান ব্যবহার করবে নাসা। গত আগস্টেই পরীক্ষামূলকভাবে বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানটিকে মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে চেয়েছিল নাসা। কিন্তু এর মূল সেফটি ভালভে কিছু গলদ দেখা দেওয়ায় তা স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু বোয়িং তার মহাকাশযানে সেই গলদ সারিয়ে ফেলেছে বলে নাসা সূত্রের খবর।
নাসা জানাচ্ছে, আগামী বছরের গোড়ার দিকেই বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযান প্রথম যেতে পারে মহাকাশ স্টেশনে। যদিও তাতে কোনো মহাকাশচারী থাকবেন না। সেই পরীক্ষা সফল হলে আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই স্টারলাইনারই হয়ে উঠতে চলেছে মহাকাশ স্টেশনে নাসার মহাকাশচারী পাঠানোর প্রধান যান। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
Leave a Reply