আপনি যখন ব্যবসা করছেন, তখন ব্যবসার লাভ ক্ষতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সরকারি নীতিমালার প্রতিক্রিয়া, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব মেনে নিয়ে তা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েই ব্যবসা করবেন। ব্যবসায় আপ টাইম যেমন থাকবে, ডাউন টাইমও থাকবে- এগুলো মেনে নেয়ার এবং মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিয়েই আপনাকে ব্যবসা করতে হবে। সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতিও মেনে নেয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে।
ডিজেলের দাম বাড়ানোর ঘোষনাকে অজুহাত করে সারাদেশে অকস্মাৎ সারাদেশে পরিবহন মালিকরা গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে লঞ্চ মালিকরাও। দেশকে কার্যত অচল করে দিয়ে সাধারন মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এটি কার্যত অপরাধ। পরিবহন মালিকরা অপরাধ করেছেন।
পরিবহন মালিকদের নেতারা বলছেন, তারা কোনো ধর্মঘট ডাকেন নি। আইনত সরকারকে ১৫ দিন সময় না দিয়ে তারা ধর্মঘট ডাকতে পারেন না। তাই সংগঠনের নামে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট না ডেকে তারা বলছেন, মালিকরা পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে আমরা কী করতে পারি! আপনারা করতে পারেন, অবশ্যই করতে পারেন। মালিকরা যাতে স্বেচ্ছাচারী না হয়ে উঠতে পারে সেজন্যই তো সমিতি, সংগঠন। আপনারা যদি কিছুই করতে না পারেন তা হলে এইসব সংগঠন থাকার কোনো দরকার নাই। সরকার সরাসরি মালিকদের নিয়ন্ত্রন করবে, তাতে আপত্তি জানাতে আসবেন না তো! বাস মালিকরাও চাইলেই হুট করে বাস চালানো বন্ধ করে দিতে পারেন না।
আপনি যখন ব্যবসা করবেন, তখন ব্যবসার একটি ইথিকস থাকে সেটা অনুসরণ করতে হয়। ব্যবসা পরিচালনায় রাষ্ট্রের নীতি, আইনের বাইরেও এই ইথিকস আইনের মতোই অনুসরণীয়। আপনি যখন পাবলিক অরিয়েন্টেড, সেবামূলক ব্যবসা পরিচালনা করবেন, তখন হুট করে আপনি আপনার ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারেন না। আপনার ব্যবসা বন্ধের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে জনগনের তথা ভোক্তাদের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয়- সেটি পর্যালোচনা করতে হবে। সময় দিয়েই ব্যবসা বন্ধ করতে হবে, তাতে লোকসান হলেও।
পরিবহন মালিকদের বাস-লঞ্চ চলাচল বন্ধের আগে সরকারকে সময় দেয়া দরকার ছিলো, জনগনকে জানানো দরকার ছিলো। হুট করে বাস বন্ধ করে দিয়ে জনগনেকে দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়ে পরিবহন মালিকরা বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এই অপরাধের শাস্তি হওয়া দরকার।
Leave a Reply