সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার, লেগুনা, অটো-টেম্পো, অটোরিকশার পৃথক ভাড়া নির্ধারণ করে চলমান ‘ভাড়া নৈরাজ্য’ ও ‘যাত্রী হয়রানি’ থেকে আইনি সুরক্ষা পাওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শুধু ডিজেলচালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ালেও এই ভাড়াবৃদ্ধির আদেশ জারির সাথে সাথে সিএনজি, ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনচালিত সব ধরনের বাস-মিনিবাসের পাশাপাশি হিউম্যান হলার, লেগুনা, অটো-টেম্পো, অটোরিকশা, প্যাডেলচালিত রিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
সংগঠনের গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্য ও সারা দেশে সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানির সামগ্রিক দিক পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পেয়েছেন যে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশব্যাপী চলাচলরত সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার, লেগুনা, অটো-টেম্পো এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অস্বাভাবিক হারে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী সব ধরনের গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের থাকলেও এসব পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ না করায় ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় যাত্রীসাধারণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে যাত্রীরা নাজেহাল হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়েছে, এসব গাড়িতে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও যাত্রীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত প্রায় এক দশক ধরে এসব যানবাহনের ভাড়া নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর কাছে আবেদন করা হলেও সরকার ভাড়া নির্ধারণ করেনি। গণমাধ্যমে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে ফাইল একটু আগায় আবার গণমাধ্যম নীরব হলে ফাইল আবার ডিপ ফ্রিজে ঢুকে পড়ে বলে স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়।
এছাড়া যাত্রী প্রতিনিধিবিহীন গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণের কারণে মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া নির্ধারণের ফলে যাত্রীসাধারণ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব যানবাহনের ভাড়া নির্ধারণের আগে গণপরিবহন ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি ও ভাড়া নির্ধারণ কমিটি পুনর্গঠন করে মালিক-শ্রমিকদের সংখ্যানুপাতে যাত্রী প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান সংগঠনটি।
Leave a Reply