রতন টাটা কেবল বিখ্যাত শিল্পপতিই নন, তিনি তৈশি কাজের জন্যও পরিচিত। ভারতের অন্যতম সফল শিল্পপতি রতন টাটা। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটার দত্তক পৌত্র এবং নেভাল টাটার পুত্র। টাটা সনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাঁর ব্যবসায়িক নীতিশাস্ত্র এবং জনহিতৈষীর জন্য জনপ্রিয়। ১৯৫৫ সালে তিনি নিউইয়র্ক সিটির রিভারডেল কান্ট্রি স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। ১৯৫৯ সালে তিনি নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্য বিভাগে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। রতন টাটার জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের অজানা কিছু তথ্য। রতন টাটা ১৯৬২ সালে টাটা গ্রুপে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি যখন টাটা গ্রুপে যোগ দিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিলো মাত্র ২৪ বছর। প্রাথমিকভাবে তিনি টাটা স্টিলের কর্মচারী ছিলেন।
১৯৯১ সালে রতন জেআরডি টাটার পরে টাটা গ্রুপের পঞ্চম চেয়ারম্যান হন তিনি। টাটা গ্রুপে টেটলি, জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার এবং কোরসের মতো সংস্থাগুলোর মালিকানা অর্জন করেছিলেন। তিনি ন্যানোর মতো গাড়ি বানিয়ে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন এবং বাজারে ইন্ডিকার মতো গাড়ি চালানোও তাঁর অবদান।
রতন টাটার সঙ্গে টাটা পরিবারের রক্তের সম্পর্ক নেই। তাঁর বাবা নাভাল টাটা ছিলেন স্যার রতন টাটা এবং তাঁর স্ত্রী নবজবাই শেঠের দত্তক পুত্র। রতন টাটার বাবা-মা শৈশবে আলাদা হয়ে গেলেও রতন টাটা তার মায়ের খুব কাছের ছিলেন। রতন টাটা যখন টাটায় যোগদান করেন, তখন টাটা সংস্থার মোট টার্নওভার ছিলো ১০ হাজার কোটি টাকা, তবে ২০১১-১২ সালে আয় ছিলো ৪৭৫.৭২১ কোটি টাকা। আজ টাটা গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থা প্রায় ৮০টি দেশে উপস্থিত রয়েছে। প্রায় ২১ বছরের ক্যারিয়ারে রতন টাটা, টাটা গ্রুপকে সাফল্যের এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন। শিল্পে মেধাবী কাজের জন্য তিনি ২০০০ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০৮ সালে পদ্মবিভূষণ ভূষিত হন। মুম্বই সন্ত্রাস হামলার সময় তাজ হোটেলের ওপর আক্রামণ করা হলে প্রচুর কর্মী অসহায় হয়ে পড়েন। সকলকে সাহায্য করেছিলেন রতন টাটা। ২০০৮ সন্ত্রাসবাদ হামলার পরে রতন টাটা নিজেই তাঁর কর্মচারীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন।
২০১০ সালে কর্পোরেট লবিস্ট নীরা রাদিয়া টেপ মামলায়ও তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিলো। ২০০২ সালে, ৬৫ বছর বয়সে সংস্থা তাঁকে অবসর নিতে দেয়নি। তিন বছর পরও একই পরিস্থিতি তৈরি হলে, বোর্ড অবসরকালীন বয়স বাড়িয়ে ৭৫ বছর করে দেয়। নিঃসন্দেহে তাঁর আমলে রতন টাটা কোম্পানিকে সাফল্যের নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। শান্ত স্বভাবের মানুষ রতন টাটা। তিনি বহু বছর ধরে শিক্ষা, চিকিৎসা এবং গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বহুভাবে এগিয়ে এসেছেন। বাণিজ্যিক এবং জনহিতৈকর কাজে তাঁর অবদানের জন্য রতন টাটা অনেক প্রশংসিত ও পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর ৮৩তম জন্মদিনে রতন টাটাকে অনেক শুভেচ্ছা।
Leave a Reply