কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে সমুদ্রগামী জাহাজ ভেড়ানোর এক বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল বুধবার। এই এক বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি জেটিতে ৪৯টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়েছে। নির্মাণের অপেক্ষায় থাকা চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রের টার্মিনালের শেষ মাথায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটি দুটির অবস্থান।
গত বছর ২৯ ডিসেম্বর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেল খালাসের জেটিতে প্রথমবারের মতো সমুদ্রগামী ‘এমভি ভেনাস ট্রায়াম্প’ ভেড়ানো হয়। নির্মাণাধীন অবস্থায় কয়লা খালাসের আরেকটি জেটিতে প্রথম জাহাজ ভেড়ানো হয় গত ১৫ জুলাই। গত নভেম্বরে ৩০০ মিটার লম্বা এই জেটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এ নিয়ে দুটি জেটিতে এ পর্যন্ত ৪৯টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়েছে ৫৬ হাজার ৫৮২ টন পণ্য।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড মাতারবাড়ীতে দুটি জেটিসহ ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি চালুর কথা রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য এক বছর ধরে নিজস্ব জেটি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ থেকে ইস্পাতের নানা কাঠামোসহ সরঞ্জাম আমদানি করা হচ্ছে।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই জেটি ব্যবহার করে এখন মূলত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সরঞ্জাম আমদানি হচ্ছে। বছর দুয়েক এভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম আমদানি করা হবে। এরপর বড় জাহাজ থেকে কয়লা খালাস হবে।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর আনুষঙ্গিক সুবিধা দিচ্ছে বন্দর। বন্দর জলসীমার আওতায় থাকা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটির একটু দূরেই নির্মাণ হবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল। চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে লজিস্টিকস সুবিধা দিয়ে আসছে বন্দর। বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি জেটিতে এখন প্রকল্পের পণ্য নামানো হচ্ছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে চাইলে বন্দর এ জেটি ব্যবহার করতে পারবে।
মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটি ও নির্মাণের অপেক্ষায় থাকা বন্দরের টার্মিনালে জাহাজ ভেড়ানোর জন্য ১৪ কিলোমিটার লম্বা নৌপথে সাড়ে ১৮ মিটার গড় গভীরতা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এই গড় গভীরতার অর্থ হলো নৌপথে ভাটার সময় প্রায় ১৬ মিটার পানি থাকবে। তাতে এই নৌপথ ব্যবহার করে ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যাবে।
মাতারবাড়ীতে জাহাজ ভেড়ানোর মূল সমন্বয়কারী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক চট্টগ্রাম বন্দরের ক্যাপ্টেন মো. আতাউল হাকিম সিদ্দিকী জানান, এই নৌপথে সামনে বড় জাহাজ ভেড়ানো হবে। তার আগেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর অভিজ্ঞতা বন্দরের পাইলটদের খুবই কাজে দেবে। সক্ষমতাও বাড়বে।
Leave a Reply