1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রী পরিবহন তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বিশ্বখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড রয়েল এনফিল্ড খুব শিগগিরই বাজারে আসছে সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী এমটি কনসার্টো জাহাজে বাংলাদেশী নাবিকের মৃত্যুর তদন্ত দাবি লুব্রিকেন্ট আমদানিতে বাড়তি শুল্কায়নে ডলার পাচার বাড়বে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সম্পাদক ওসমান আলীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, অপসারণ দাবি

বিমানবন্দরে এত মশা কেন?

চৌধুরী আকবর হোসেন
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২

ঝাঁকে ঝাঁকে মশার কারণে দুদণ্ড শান্তিতে দাঁড়ানোর জো নেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে টার্মিনাল ভবনের ভেতর মশা কিছুটা কমলেও বাইরে বেড়েছে অসহনীয় মাত্রায়। এমনকি উড়োজাহাজের ভেতরেও মশা ঢুকে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে যাত্রীদের।
অনুসন্ধানে দেখা গেলো, বিমানবন্দরের আশপাশের জলাশয়গুলোতে অবাধে প্রজনন কেন্দ্র বানিয়েছে মশা। এসব পরিষ্কার করে মশা নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মধ্যে নেই সমন্বিত উদ্যোগ। ফলে শুধু টার্মিনাল এলাকায় মশা নিধনের উদ্যোগও বিশেষ কাজে আসছে না।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শাহজালালে প্রতিদিন সকালে লার্ভিসাইড স্প্রে করা হয়। বিকাল থেকে ইনসেকটিসাইড স্প্রে ও ফগিং করা হয়। এছাড়া টার্মিনালে প্রবেশের গেটগুলোতে জ্বালানো হচ্ছে ধূপ। গেটগুলোতেও বসানো হয়েছে মশা মরার যন্ত্র। তবু মশার উৎপাত কমছে না।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সন্ধ্যা হলেই শাহজালাল বিমানবন্দরে ঝাঁক বেঁধে আসে মশার দল। এতে ভেতরে-বাইরে অনেককেই দেখা যায় কয়েল জ্বালাতে। বেশি ভোগান্তি হয় বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের। দিনের বেলাও তাদের মশার উৎপাত সহ্য করতে হচ্ছে।
সৌদিগামী যাত্রীর স্বজন আব্দুল আলিম বলেন, ঢাকার অন্য জায়গাতেও মশা আছে। কিন্তু বিমানবন্দরে মনে হয় কয়েকগুণ বেশি। একটা দেশের প্রধান বিমানবন্দরের এমন অবস্থা কাম্য নয়। কয়েক ঘণ্টা এখানে থাকতে হবে, তাই কয়েল কিনলাম। এতেও কাজ হচ্ছে না।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাসিক সমন্বয় সভায় মশার উৎপাত নিয়ে আলোচনায় হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বিমানবন্দরের ভিআইপি ও বোর্ডিং ব্রিজসহ সকল স্থানে মশার উপদ্রব বেড়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে এটা আরও বাড়বে। সংশ্লিষ্টদের মশা নিধন কার্যক্রম মনিটরিংয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এ নিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যানকে নির্দেশনাও দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব। সভায় বিমান প্রতিমন্ত্রীও মশা নিধনে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, মশা নিধন প্রক্রিয়া চলমান আছে। ট্রেডিশনাল পদ্ধতিও অনুসরণ করা হচ্ছে— ধূপ দেওয়া হচ্ছে। এসব বিমানবন্দরের জন্য শোভনীয় নয়। তবে মশা থেকে তো মুক্তি পেতে হবে। অ্যাপ্রোন এলাকায়ও ফগিং করা হচ্ছে। আমি নিজে দেখেছি এয়ারক্রাফটের ভেতরেও মশা। এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছি। এয়ারক্রাফট বোর্ডিং ব্রিজে যুক্ত হওয়ার সময়ই মশা ঢুকে পড়ে। এ কারণে বোর্ডিং ব্রিজগুলোতে স্প্রে রাখা হয়েছে। এয়ারলাইনসগুলোকে বলা হয়েছে, যাত্রী প্রবেশের আগেও যেন উড়োজাহাজে মশার ওষুধ স্প্রে করে।
তারপরও মশা কমছে না কেন? জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিমানবন্দর এলাকা ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার জায়গা। এটা আলোকিতও। এর আশপাশে পাঁচ কিলোমিটারও যদি পরিচ্ছন্ন না থাকে তবে মশা এখানে (বিমানবন্দরে) উড়ে আসবে। এখন সিটি করপোরেশন আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে পারলে বিমানবন্দরও মশামুক্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কিন্তু সিভিল এভিয়েশনকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে মশা মারার মেশিন কিনে দিয়েছি। তাদের কেনার সক্ষমতা আছে। তারপরও দিয়েছি। আমার মনে হয় সিটি করপোরেশন, সিভিল এভিয়েশন সবা্ই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে মশার উৎপাত কমাতে পারবো।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মশা মারতে বেবিচক, সিটি করপোরেশনের পৃথক উদ্যোগ থাকলেও সমন্বিত উদ্যোগ নেই। দফায় দফায় বৈঠক হলেও মশার উৎপত্তিস্থল নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, ঢাকায় ১৩ প্রজাতির মশা দেখা যায়। এরমধ্যে এডিসসহ ৪ প্রজাতির মশা বেশি।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, মশা তীব্র আলো পছন্দ করে না। যে কারণে দিনে উৎপাত নেই। সন্ধ্যার মৃদু আলোতে উৎপাত বাড়ে। এছাড়া মশা ৪-৫ কিলোমিটার উড়ে যেতে পারে। কিন্তু সব সময় তো আর দূর থেকে উড়ে এসে কামড়াবে না। আপনাকে যদি মশা কামড়ায় তবে বুঝতে হবে আবাসস্থল আশেপাশে ২০০-৩০০ মিটারের মধ্যেই আছে।
এই কীটতত্ত্ববিদের কথার সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে বাংলা ট্রিবিউন। দেখা গেলো, বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনাল ও অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে জলাশয়। সেখানে প্রচুর মশার বিচরণ দেখা গেছে। এছাড়া, বিমানের প্রশাসনিক ভবন, সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং একাডেমি, কাস্টম হাউসের আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় অপরিচ্ছন্ন জায়গা ও ঝোপঝাড়ও রয়েছে।
বিমানবন্দরের বিপরীতে বেবিচকের অধীনে কিছু জায়গাতেও আছে জলাশয়। আনসারদের থাকার জায়গার পাশেও ময়লার স্তূপ ও জলাশয়। যেখানে মশার উপস্থিতি চোখের পড়ার মতো। এছাড়া, হজ ক্যাম্পের পেছনে বেবিচকের জলাশয়গুলোতে মশার অবাধ বিচরণ দেখা গেছে। বেবিচক কর্মীদের আবাসিক এলাকার চিত্রও একই। স্থানীয়রা বলছেন, যেসব জলাশয় লিজ দেওয়া সেখানে মাছের চাষ হয়। সেগুলোতে তেমন মশা নেই। যেগুলো এমনি পড়ে আছে— কচুরিপানা ও আবর্জনায় ভরা, সেখানেই হচ্ছে মশার প্রজনন।
ওষুধ দিয়েও মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন প্রশ্নে ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কিনা এটাও গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধের মাত্রা নিম্ম পর্যায়ের থাকলে, কিংবা নিন্মমানের হলে মশা মরবে না। এতে তারা আরও রেজিস্ট্যান্ট হয়ে উঠবে। মশার ডিম পাড়ার জায়গাগুলো পরিষ্কার না করে শুধু ফগিং করে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, কোনও এলাকায় যদি মশার উৎপাত অস্বাভাবিক বেড়ে যায় তবে বুঝতে হবে, সেই এলাকার পরিবেশ মশার প্রজনন উপযোগী। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের উচিত এ কাজে কীটতত্ত্ববিদের পরামর্শ নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। উৎস : বাংলা ট্রিবিউন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT