1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
র‌য়্যাল এনফিল্ডের ৩৫০ সিসির নতুন ৪ বাইকের যত ফিচার ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ১০ দেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হলেন স্টার লাইনের হাজী আলাউদ্দিন তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নামুক আবার পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা

এয়ারলাইন্স এর ভাড়া নির্ধারণে জানা অজানা অনেক ফ্যাক্টর জড়িত

মো. কামরুল ইসলাম 
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২

প্লেনের ভাড়ার সাথে বাস কিংবা ট্রেনের ভাড়ার তুলনা অনেকেই করে ফেলেন। দূরত্ব তো একই। সময় একটু কম আর বেশী এই যা। তাতেই দামের এত পার্থক্য? মেনে নেয়া যায় না। গত মাসে ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে যাওয়ার সময় ভাড়া ছিলো ৪৩০০ টাকা আর এখন ৫০০০ টাকা, এইটা কি করে সম্ভব? এয়ারলাইন্সগুলো মন চাইলেই ইচ্ছেমতো ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটছে। প্রচন্ড আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন একজন যাত্রী। আসলেই কি তাই? একটি এয়ারলাইন্স নানাবিধ ক্যালকুলেশন করে কোনো একটি রুটের যাত্রী ভাড়া নির্ধারন করে থাকে। সেটা হোক অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তর্জাতিক রুট।
একটি এয়ারলাইন্স এর পরিচালন ব্যয়ের চেয়ে ভাড়া যদি কম নির্ধারিত হয়, নিশ্চিতভাবেই এয়ারলাইন্সকে শেষের মাইলফলকটা সময়ের আগেই দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। সারাবিশ্বের বহু এয়ারলাইন্স এর সাথে দেশীয় কিছু এয়ারলাইন্স এর উদাহরণ রয়েছে। যারা একসময় বিশ্ব এভিয়েশনে আকাশপথে বিচরণ করে বেড়াতো। কিন্তু এখন সেই সব এয়ারলাইন্সগুলো ইতিহাসের পাতায় অবস্থান করছে। এয়ারক্রাফট চয়েস কিংবা রুট চয়েস কিংবা সময় চয়েস কিংবা ভাড়া নির্ধারণে ভুল সিদ্ধান্ত একটি এয়ারলাইন্সকে শেষের পরিণতি দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয় অবধারিতভাবেই।
বাংলাদেশ এভিয়েশনের ৫০ বছরের ইতিহাস অনেকটা বন্ধুর। জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চলার পথটা খুব একটা মসৃণ বলার সুযোগ নেই। আর বেসরকারি বিমান সংস্থা হিসেবে জিএমজি এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ কিংবা রিজেন্ট এয়ারওয়েজ এর মতো ৮টি থেকে ৯টি এয়ারলাইন্সও নানাবিধ কারনে বন্ধ হয়ে ইতিহাস হয়ে গেছে। টিকে থাকার লড়াইয়ে আছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই দু’টি এয়ারলাইন্স এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
শুরু করেছিলাম বিভিন্ন রুটের যাত্রী ভাড়া নিয়ে। সারাবিশ্বের সব এয়ারলাইন্স এর সব রুটের ভাড়া নির্ধারণের সময় সাধারণত বিভিন্ন শ্রেণীর ভাড়াকে কয়েকটি ধাপে নির্ধারণ করে থাকে। একটি প্যাসেঞ্জার এয়ারলাইন্স এর আয়ের একটি মাত্র উপায় থাকে তা হচ্ছে যাত্রীদের ভাড়া। আর সেই ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে সকল ধরণের খরচের কথা বিবেচনায় রাখতে হয়। সেই ভাড়া নির্ধারণ থেকে শুরু করে প্রতি মূহূর্তের পূনর্বিন্যাস করার প্রতিটি ধাপের জন্য রয়েছে এয়ারলাইন্সগুলোর একটি ডিপার্টমেন্ট, তা হচ্ছে ইলড্ ম্যানেজমেন্ট কিংবা রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট।
একটি রুটের ভাড়া নির্ধারণে এ্যারোনোটিক্যাল চার্জ (ল্যান্ডিং, পার্কিং, সিকিউরিটি, রুট নেভিগেশন), বিভিন্ন ধরনের নন-এ্যারোনোটিক্যাল চার্জ (অফিস স্পেস, বোর্ডিং ব্রিজ, হ্যাঙ্গার সুবিধা) ইত্যাদির ফিগুলো বিবেচনায় রাখতে হয়। বিশ্ববাজারে লাগামহীন জেট ফুয়েলের দামের উঠা-নামা ভাড়ার উপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে। যেকোনো রুটের পরিচালন ব্যয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই জেট ফুয়েলের খরচ।
ভাড়া নির্ধারণের সময় বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের ট্যাক্স, সিকিউরিটি ফি, এম্বারকেশন ফি, এক্সাইজ ডিউটিসহ নানাবিধ চার্জকে প্রাধান্য দিতে হয়। ইন্স্যুরেন্স সারচার্জকেও বিবেচনায় রাখতে হয়। বিশ্ববাজারের সাথে ডলারের বিনিময় হারও ভাড়া নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
খরচের খাতে বিমানের ইজারা বা সম্পূরক ক্ষেত্রে আয়কর ও ভ্যাট যুক্ত থাকায় এয়ারলাইন্স এর পরিচালন ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই অনুরূপ আয়কর ও ভ্যাট প্রযোজ্য না থাকায় বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে আমাদের দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না।
মূল্য সংযোজন কর নীতিমালায় আগাম কর বা এডভান্স ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা পৃথিবীতে খুবই একটি বিরল নীতিমালা। বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলো তাদের দেশে আগাম কর প্রদান করতে হচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশে বিমান, ইঞ্জিন কিংবা যন্ত্রাংশ আমদানীর সময় কোটি কোটি টাকা আগাম কর প্রদান করে থাকে। ফলে বিদেশী এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় দেশী এয়ারলাইন্সগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেসকল ক্ষেত্রে ইজারাকৃত বিমান, ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ বিদেশী মালিককে ফেরৎ প্রদান করা হয়, তখন প্রদত্ত আগাম কর এয়ারলাইন্সগুলোকে সরকার কর্তৃক ফেরৎ দেয়া হয় না। এর ফলে অযৌক্তিক খরচের খাতের কারনেও ভাড়া নির্ধারনের সময় এ ধরনের খরচকেও গুরুত্ব বিবেচনায় রাখতে হয়।
দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অথবা বেবিচক কর্তৃক বিমানবন্দরে ভিভিআইপি ফ্লাইট, বিমানবাহিনীর মহড়া ও অন্যান্য কারণে সাময়িক বন্ধ রাখা কিংবা বিমানের দূর্ঘটনাজনিত কারণে বিমানবন্দর বা রানওয়ে বন্ধ রাখার কারনে ওয়াচ আওয়ার এক্সটেনশনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ওয়াচ আওয়ার বৃদ্ধির জন্য এয়ারলাইন্সগুলো কোনোভাবেই দায়ী নয় কিন্তু বেবিচক এয়ারলাইন্সগুলোকে ওয়াচ আওয়ারের এক্সটেনশনের জন্য ঘন্টা প্রতি উচ্চ হারে চার্জ আরোপ করে, সেটাও ভাড়ার উপর বর্তায়।
অভ্যন্তরীণ রুটের এ্যারোনোটিক্যাল চার্জ এর প্রায় ৮ থেকে ৯ গুণ বেশী চার্জ নির্ধারণ করা আছে আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য যা আন্তর্জাতিক রুটের ভাড়া নির্ধারণে প্রভাব পড়ে। আবার জেট ফুয়েলের মূল্য আন্তর্জাতিক রুটের থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটে প্রায় লিটার প্রতি ১১ থেকে ১২ টাকা বেশী প্রদান করতে হয়। এগুলো যাত্রী ভাড়া নির্ধারনে সরাসরি প্রভাব পরে থাকে। এছাড়া প্রশাসনিক খরচ তো রয়েছেই। যেকোনো ট্রেডের খরচের থেকে এভিয়েশনের পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার, কেবিন ক্রুদের বেতনের উচ্চসীমার সাথে রয়েছে ফ্লাই এ্যালাউন্সসহ নানাবিধ খরচ। সব ধরনের খরচই ভাড়ার উপর প্রভাব পড়ে।
একটি এয়ারলাইন্স ব্যবসায়িকভাবে টিকে থাকলেই যাত্রীদের সেবা দেওয়ার সুযোগ পাবে নতুবা ইতিহাসের অংশীদার হয়ে যাবে। আকাশ পরিবহনে কম ভাড়া নয় ভালো সেবা আর অনটাইমে ফ্লাইট পরিচালনার প্রত্যাশা সকলের। প্রত্যাশিত সেবাই পারবে দেশীয় এয়ারলাইন্সকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একটি সুদৃঢ় ও দীর্ঘ স্থায়ী অবস্থান তৈরী করতে।
লেখক : মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT