ভারতের স্বল্প খরচের (বাজেট) বিমান পরিবহন সংস্থা স্পাইসজেটের উড়োজাহাজগুলো গত কয়েক দিনে বারবার সমস্যায় পড়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি হওয়ার পাশাপাশি সংস্থাটির নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ভারতের নয়াদিল্লি থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে স্পাইসজেটের একটি ফ্লাইট। কিন্তু জ্বালানি ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজটিকে পাকিস্তানের করাচিতে জরুরি অবতরণ করতে হয়।
দুবাইগামী ফ্লাইটে থাকা শভি শর্মা নামের এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘অবতরণের পরও আমাদের পাঁচ ঘণ্টা বিমানেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট ১২ ঘণ্টা পর দুবাই পৌঁছতে পেরেছি। দুবাই গিয়ে প্রথমেই আমার ফিরতি টিকিট বাতিল করেছি।’

ঠিক একই দিন স্পাইসজেটের আরো দুটি বিমানে ত্রুটি ধরা পড়ে। একটির উইন্ডশিল্ডের বাইরের আবরণে ফাটল দেখা দেওয়ায় তা জরুরি অবতরণ করানো হয়। আরেকটি বিমানের আবহাওয়া রাডারে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সেটি ছেড়ে যাওয়া বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়।
স্পাইসজেটকে ভারতের শীর্ষ পাঁচটি বিমান পরিবহন সংস্থার একটি মনে করা হয়। অথচ গত ১৮ দিনেই এ সংস্থার উড়োজাহাজে প্রযুক্তিগত ত্রুটির আটটি ঘটনা ঘটেছে। এতে তাদের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ কারণে ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা স্পাইসজেটের ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তদারকির দুর্বলতা’ নিয়ে একটি জরুরি নোটিশ জারি করেছে।

নানা সমস্যা ও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও স্পাইসজেট টিকে আছে মূলত টিকিটের কম দামের কারণে। মনে করা হচ্ছিল, দাম কম থাকায় স্পাইসজেটের ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে না। কিন্তু সে চিত্রও এখন পাল্টে যাচ্ছে।
মঙ্গলবারের পর স্পাইসজেটের শেয়ারের দাম ৭ শতাংশ কমে গেছে। উদ্বিগ্ন যাত্রীরা তাদের টিকিট বাতিল করছেন। বড় কোনো দুর্ঘটনার আগেই স্পাইসজেট বন্ধ করার দাবিও করছেন অনেকে। এসব ঘটনা ভারতের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে স্পাইসজেট। সংস্থাটি জানিয়েছে তারা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্পাইসজেটের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের সব বিমান এক মাস আগেই পরীক্ষা হয়েছে এবং দেখা গেছে সব বিমান সম্পূর্ণ নিরাপদ।’ সূত্র : বিবিসি।
Leave a Reply