নোয়াখালী শহরে সড়ক ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। এর মধ্যে সোনাপুর থেকে মাইজদী চৌরাস্তা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার একেবারে বেহাল। সড়কে প্রচুর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পড়ে আছে কাদামাটির স্তূপ। বড় বড় গর্তে জমেছে পানি। এতে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, ১৩.৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কের মধ্যে সোনাপুর থেকে মাইজদী বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পার হতে বড়জোর ১৫ মিনিট সময় লাগার কথা। বর্তমানে এক ঘণ্টায়ও পার হওয়া যায় না।
সরেজমিন সোনাপুর-চৌরাস্তা সড়কের উত্তর সোনাপুর, দত্তেরহাট, মাইজদী ও মাইজদী বাজার অংশ ঘুরে দেখা গেছে, ফোর লেনের কাজ চলায় সড়কের পাশে মাটি খুঁড়ে বড় বড় গর্ত করা হয়েছে। কোথাও গর্ত ভরাটের কাজ চলছে। এসব গর্তে জমে আছে পানি। পানির কারণে মূল সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কাদামাটিতে স্যাঁতসেঁতে পুরো সড়ক। নোয়াখালী শহরে বিকল্প সড়ক না থাকায় এই সড়ক দিয়ে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এতে যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে ১৩.৩৮ কিলোমিটার ফোর লেনের কাজ তিনটি গুচ্ছে (প্যাকেজ) হচ্ছে। এর মধ্যে ২ ও ৩ নম্বর গুচ্ছের প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়ক ফোর লেনে উন্নীত করা বাকি। এই অংশে কাজে? নিম্নমানের পাথর, ইট ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড ও ইনফ্রাটেক নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে।

সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা জানান, সড়কের যে অবস্থা, একবার সোনাপুর থেকে মাইজদী কিংবা মাইজদী বাজার গেলে দ্বিতীয়বার এই সড়ক দিয়ে আর যাতায়াত করতে ইচ্ছা করে না। ভাঙা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বিকল হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ। একটু বেশি ভাড়া আদায় করলেও লাভের চেয়ে দণ্ড বেশি হচ্ছে।
চলাচলের অসুবিধার কথা স্বীকার করে নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্যাহ বলেন, ‘আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শহরসহ পুরো কাজ শেষ হবে। শহরে বিভিন্ন অবকাঠামো সরানো হলেও বৈদ্যুতিক খুঁটি, টেলিফোনের খুঁটি, গ্যাসের রাইজার থাকায় কিছুটা সমস্যা ছিল। এখন কাজ চলছে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এখন দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছি।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে। তবে শহরের স্থাপনা এবং বিদ্যুত্ ও গ্যাসলাইন যথাসময়ে সরিয়ে না নেওয়ায় কাজ এগোতে পারিনি।’ অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাজের প্রাক্কলন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা প্রতিনিয়তই সড়ক বিভাগ তদারকি করছে। প্রতিনিয়তই বড় গর্তগুলোতে ইট-বালু ফেলে খানাখন্দ ভরাট করা হচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে ইট-বালু সরে গিয়ে কাদামাটি আর পানি জমছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ফোর লেনের কাজের জন্য যেসব প্রতিবন্ধকতা ছিল, তা আমরা শেষ করেছি। বিষয়টি আমাদের জন্য কষ্টদায়ক, আমি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সড়ক সংস্কারের জন্যনিজেই ব্যবস্থা নেব।’
Leave a Reply