সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট সিন্ডিকেট। গ্রুপ টিকিট নিয়ে সংকট তৈরি করে বাড়ানো হচ্ছে দাম। নির্ধারিত কিছু ট্রাভেল এজেন্সিকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজে সিন্ডিকেট তৈরি করছে বিমানের অসাধু কর্মকর্তারা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সৌদিগামী প্রবাসী কর্মী ও ওমরা যাত্রীরা।

বিমানকে সিন্ডিকেটের হাত থেকে বাঁচাতে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতিতে যাওয়ার পরামর্শ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের। এ অবস্থায় সিন্ডিকেটের বিষয়ে তদন্তের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, কারসাজির প্রমাণ পেলে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না।
গেল কয়েক দিন ধরেই গণমাধ্যেমে এভিয়েশন শিল্পের যে খবরটি সবার নজর কেড়েছে, তা হলো আবারও সক্রিয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট সিন্ডিকেট।
বিশেষ করে ওমরা যাত্রীদের টিকিটের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অভিযোগ উঠেছে বিমানের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় মতিঝিলের সেলস অফিসের সঙ্গে ঢাকার ২৫টি এবং চট্টগ্রামের তিনটি ট্রাভেল এজেন্সি সিন্ডিকেট করে দাম বেশি নিচ্ছে টিকিটের। ওইসব এজেন্সির কাছে বিক্রি করা হয়েছে সৌদি আরবের দুই হাজার টিকিট। তাদের বাড়তি সুবিধা দিতে গত ২৩ আগস্ট পরিচালনা করা হয়েছে সৌদির বিশেষ ফ্লাইট।

কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার জহির উদ্দিন খন্দকার বলেন, এখানে সিন্ডিকেট না। আমাদের এয়ারলাইনসের অনুমতি আছে। বিমানই আমাদের অফার দিয়েছে যে, আমরা গ্রুপ ফেয়ার করতেছি। আপনারা আমাদের যাত্রী আছেন কি না? ওই সময় পুরো মাসে আমরা ২৫২টি পেয়েছি।
রয়েল এয়ার সার্ভিস সিস্টেমের স্বত্বাধিকারী পিয়ার আহমেদ পাটোয়ারী বলেন, মাত্র ১৬৩ জনের আমি পেয়েছি চারটা গ্রুপ মিলে। পত্রিকায় কেন নাম এসেছে, আমি জানি না। পাঁচজনের মধ্যে আমি কেন আসলাম তা-ও বলতে পারব না। র্যাব কেন আসছে, তা-ও বলতে পারব না।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের টিকিট না পেয়ে ওমরাহ এজেন্সিগুলো বেকায়দায় পড়ে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছে। ওমরাহ এজেন্সির একজন বলেন, টিকিটের দাম ছিল ৭০ থেকে ৭২ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টিকিট এখন আমাদের নিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ৯৩ থেকে ৯৪ হাজার টাকায়। এমন কারসাজিতে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওয়াতায় আনা দরকার বলে মনে করেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম। তিনি বলেন, এটা কিন্তু এয়ারলাইনসের স্বীকৃত একটি ব্যবস্থা যে এখানে গ্রুপ করে কোনো বুকিং করা সম্ভব না। যাত্রীদের নাম, পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে বুকিং করতে হবে। সে জায়গায় ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিমান যদি করে থাকে তাহলে সেটা মোটেও সমীচীন হয়নি।
এ ঘটনায় বিব্রত জানিয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী বললেন, দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তাদের সুপারিশের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং আমরা এটা ভালোভাবে দেখব। যদি এটার মধ্যে কারও সংশ্লিষ্টতা থাকে, তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর।
Leave a Reply