শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিলাসবহুল ১০টি গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ)। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১৭ কোটি টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে গাড়িগুলো এরই মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব গাড়ির ক্রয়মূল্য ছিল ১ কোটি ১০ লাখ থেকে শুরু করে প্রায় ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাঠানো একটি চিঠিতে এসব তথ্য জানিয়েছে এনএসইউ কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সময়ে কেনা ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে প্রাপ্ত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলে জমা দিতে গত মে মাসে এনএসইউ উপাচার্যকে একটি চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘জানুয়ারি ২০১৯ থেকে জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত সময়ে কেনা ১০টি বিলাসবহুল গাড়ি খোলা দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করে বিক্রয়কৃত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নে ব্যয়ের লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ধারা ৪৪ (১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলে জমা প্রদানপূর্বক এ বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে জরুরি ভিত্তিতে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
ওই চিঠির আলোকে গত ২৬ জুন উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর সম্প্রতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ১০টি গাড়ি ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৭৪৫ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। গাড়ি বিক্রিসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে এনএসইউ কর্তৃপক্ষ। ওই প্রতিবেদনে গাড়ির নম্বর ও বিক্রয়মূল্য উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০টি গাড়ির মধ্যে আটটি রেঞ্জ রোভার বিক্রি করা হয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার ২৪৫ টাকায়। এক্ষেত্রে রেঞ্জ রোভারগুলোর দাম উঠেছে ১ কোটি ৭১ লাখ থেকে ২ কোটি পর্যন্ত। আর বাকি দুটি গাড়ির মধ্যে মার্সিডিজ বেঞ্জ ১ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার ও টয়োটা প্রাডো ৯০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে উন্মুক্ত দরপত্রের আলোকে গাড়িগুলো বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলে জমা হওয়ার পর গাড়িগুলো ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিক্রিসংক্রান্ত কমিটির মতামত অনুযায়ী, গাড়িগুলো পুরনো হওয়া সত্ত্বেও সন্তোষজনক মূল্য পাওয়া গিয়েছে। আমরা বিক্রিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।
এনএসইউর গাড়ি বিক্রি বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় একজন নীতিনির্ধারক বলেন, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এ ধরনের বিলাসবহুল গাড়ির কোনো প্রয়োজন নেই। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে গাড়িগুলো বিক্রি করে দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। সে আলোকে এনএসইউর গাড়িগুলো একটি আদর্শ মানদণ্ড অনুসরণ করে বিক্রি করা হয়েছে।
Leave a Reply