বঙ্গবন্ধু সেতুতে বর্তমানে টোল আদায় করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) নিজেই। মামলা চলায় সাত বছর ধরে সেতুতে টোল আদায়ে কোনো অপারেটর নিয়োগ দেয়া যায়নি। গত বছর সে মামলা খারিজ হয়ে যায়। এরপর অপারেটর নিয়োগে গতি আসে। অপারেটর নিয়োগে ২০১৬ সালে আহ্বান করা দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে দরকষাকষির সিদ্ধান্ত হয় গত বোর্ড সভায়। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান অপারেশন খরচ বেশি চাওয়ায় আবারো নতুন দরপত্র করার মত দিয়েছে বোর্ড সভা।

গতকাল সেতু বিভাগের ১১৩তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয় সেতু ভবনে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সভা সূত্র জানায়, সেতুর টোল আদায়ে অপারেটর নিয়োগে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এইচপিসি-এসইএল জেভির সঙ্গে দরকষাকষি চালিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে সেতু বিভাগ টোল আদায়ে তাদের অপারেশন খরচ হিসেবে ৪৯ কোটি টাকা ধার্য করে। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান দ্বিগুণ খরচ দাবি করে। এতে রাজি হলে সেতু কর্তৃপক্ষের লোকসান হবে। তাই বোর্ড সভায় বলা হয়েছে, টোল আদায়ে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করার।

এ বিষয়ে সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, ‘বোর্ড সভায় এর আগের সভার এজেন্ডার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগে কিছু কাজ আছে, সেগুলো শেষ করে আবারো দরপত্র আহ্বান করা হবে। তার আগ পর্যন্ত আমরা নিজেরাই টোল আদায় করব।’
বঙ্গবন্ধু সেতু ১৯৯৮ সালে চালুর পর থেকে অপারেটরের মাধ্যমে টোল তুলছে বিবিএ। এ পদ্ধতিতে আদায়কৃত টোলের একাংশ নেন ঠিকাদার। নতুন অপারেটর নিয়োগে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ ‘ইওআই’ আহ্বান করা হয়। ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্রাক-যোগ্যতা অর্জন করলেও এর পাঁচটি দরপত্রে অংশ নেয়।

কারিগরি যোগ্যতা মূল্যায়নে অস্বচ্ছতার অভিযোগ করে হাইকোর্টে মামলা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস)। স্থগিতাদেশ উঠলে কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবের যৌথ মূল্যায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচপিসি এবং বাংলাদেশের এসইএলের যৌথ উদ্যোগ (জেভি) সর্বোচ্চ নম্বর পায়।
প্রতিষ্ঠানটি আদায়কৃত টোলের সাড়ে ৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জ হিসেবে নেয়ার প্রস্তাব করে। সিএনএস চেয়েছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। তবে হাইকোর্ট এইচপিসি-এসইএল জেভিকে কার্যাদেশ না দিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট এ আদেশ বাতিল করেন আপিল বিভাগ।
Leave a Reply